সারা বাংলা

ফেসবুকের কল্যাণে ৫ বছর পর বাবা-মায়ের কাছে রাকিব

পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের আগষ্ট মাসে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে হারিয়ে যায় শিশু মো. রাকিব হোসেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র সাত বছর। এরপর বিভিন্ন রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, ফুটপাত, হাটবাজারে দিন কাটে তার। সর্বশেষ শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকতে শুরু করে রাকিব। কিন্তু সেখান থেকেও পালিয়ে যায় সে। পরে উদ্ধার করে রাকিবের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানা পুলিশ।

পুলিশের করা সেই পোষ্টের সুবাদে রাকিবকে ফিরে পেতে থানায় ছুটে আসেন তার বাবা- মা। দীর্ঘ দিন পর হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়ে আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। 

শনাক্ত ও যাচাই বাছাই শেষে রোববার (১১ জুন) দুপুরে রাকিবকে তারা বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। 

রাকিব ফরিদপুর জেলার সালথা থানার জগন্নাথদী গ্রামের কৃষক মো. মোস্তফা ফকির ও মোছা. রহিমা বেগমের সন্তান। তিন ভাই-বোনের মধ্যে রাকিব সবার বড়। হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ায় পুলিশের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মোস্তফা-রহিমা দম্পতি।  

পুলিশ জানায়, গত  (৭ মে) কুমারখালী রেলস্টেশন চত্বর থেকে রাকিবকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি পোষ্ট করা হলেও তার পরিবারের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপর ১১ মে সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাধ্যমের কুষ্টিয়া শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র রাকিবকে প্রেরণ করা হয়। রাকিব সেখান থেকে ৯ জুন পালিয়ে যায়। নন্দনালপুর এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে থানায় রেখে যায়। এরপর জিডি নোট দিয়ে পরিবারের সন্ধান চেয়ে সমস্ত থানায় বার্তা পাঠানো হয়। এছাড়াও রাকিবের ছবি আবারো ফেসবুকে পোষ্ট করা হয়। 

ফেসবুকের পোষ্ট দেখে রাকিবের স্বজনরা তার বাবা মোস্তফা ও মা রহিমাকে খবর দেন। আজ (রোববার) দুপুরে তারা তাদের সন্তানকে শনাক্ত করে নিয়ে যান।

রাকিবের মা মোছা. রহিমা বেগম জানান, ২০১৮ সালে তাঁর ছেলে নানি বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকেই রাকিব নিখোঁজ ছিলো। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে পরিবারের সবাই ভেবে নিয়েছিল রাকিব হয়তো মারা গেছে। এরই মধ্যে ফেসবুকে হারানো ছেলের ছবি দেখে থানায় ছুটে আসেন তারা। রাকিবকে পুলিশের কাছে দেখতে পান তারা। এতোদিন পর ছেলেকে খুঁজে পাওয়ায় তাই আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীন হোসাইন বলেন, হারানোর পাঁচ বছর পরে ফেসবুকের কল্যাণে শিশু রাকিবকে তার বাবা-মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ হিসেবে এমন একটি মহৎ কাজ করতে পেরে আমরা সবাই গর্বিত।