সারা বাংলা

কুমিল্লায় জমে উঠেছে পশুর হাট

কোরবানির ঈদের আর মাত্র বাকি দুই দিন। আর এই ঈদকে সামনে রেখে পশু বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন গবাদি পশুর খামারি ও ক্রেতারা। এছাড়াও সক্রিয় রয়েছে অনলাইনের পশুর হাটও। 

এদিকে, গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি হওয়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারাও বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণেই এবার পশুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে।  

সোমবার (২৬ জুন) বিকেলে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, খামারিরা হাটে গরু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষা করছেন। ক্রেতারাও তাদের বাজেট অনুযায়ী হাটের বিভিন্ন স্থানে পায়ে হেঁটে পছন্দের পশুটি খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে পশু বিক্রেতাদেরকে দাম-দর করতেও দেখা গেছে। 

কুমিল্লা জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বসে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশানি বাজারে। এছাড়াও নগরীর নেউড়া, লাকসাম গরুবাজার, লালমাইয়ে ভূশ্চি গরুবাজার, যুক্তিখোলা বাজার, ফুলগাঁও বাজার, গৈয়ারভাঙ্গা বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে  দেখা যায়, পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী গরুবাজারও গড়ে উঠেছে। শেষ সময়ে পুরো দমে কেনা বেচা শুরু হয়েছে বলেও জানান খামারিরা।

 

হাটে কথা হয় কুমিল্লার লাকসামের খামারি জসিম মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, কোরবানি উপলক্ষে এ বছর ২০টি গরু বাজারে এনেছি। ইতোমধ্যে ১০টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। বাকি ১০টি বিক্রি করার অপেক্ষা করছি। কাস্টমার এসে দেখে যাচ্ছেন। আমাদের আর কাস্টমারের দামের মধ্যে বিশাল গ্যাপ। তাই বিক্রি করতে পারছি না। আশা করি ঈদের আগে সবগুলো গরু বিক্রি করতে পারবো।  

লালমাই উপজেলার ভূশ্চি গরু বাজারে গরু কিনতে আসা মোতালেব মিয়া বলেন, এ বছর গরুর দাম অনেক। এতোটাই দাম যে পশু পছন্দ হলেও কেনার উপায় নেই। ঈদেরও আর বেশিদিন নেই। কোরবানির জন্য পশু কিনতে হবেই। দেখা যাক, ভাগ্যে কি আছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলায় এবার স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে অন্তত ৪৩০টি কোরবানির পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পশুর হাট ৩৬টি, অস্থায়ী ৩৯৪টি। সবচেয়ে বেশি পশুর হাট বসছে মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪০টি করে। এছাড়া চৌদ্দগ্রামে বসবে ৩৫টি। অনলাইনেও চলছে পশু বেচা কেনা।

লালমাইয়ের ভূশ্চি বাজারে গরু কিনতে আসা আবদুর রহিম বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি, পশুর দামও বেশি। আমাদের বেতন তো আর বাড়েনি। তাই এবার কুরবানীর পশু কিনতে এসে দুইদিন ফিরে গেছি। আশা ছিলো শেষ সময় দাম কমবে। কিন্তু দাম কমার যেন কোনো নামই নেই। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে কোরবানি দিতে পারবো বলে মনে হয় না।

নগরীর নেউড়া বাজারে কোরবানির পশু কিনতে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, গরুর দাম প্রতিবছরই আকাশছোঁয়া থাকে। কিন্তু কোরবানি তো দিতেই হবে, তাই পশু কিনতে হয়। এবছর ভারতীয় গরুও বেশি দেখছি না বাজারে। যার কারণে দেশি গরুর দাম বাড়তি। ভাগে কোরবানি দেবো এবার। দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মধ্য ষাঁড় খুঁজছি। পচ্ছন্দ হলে দরদামে মিলে গেলেই কিনবো। যদি এখানে না মেলে তাহলে অনলাইন থেকে কিনবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

গরুর খামারি শফিক মিয়া বলেন, ভারতীয় গরু কম আসায় আমরা ন্যায্য দামটুকু পাচ্ছি এবার। আশা করি আগামী দুইদিনও বাজার ঠিক থাকবে। দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি, গরুর খাবারের দাম বেশি। আমাদেরও তো চলতে হয়।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক শামীম আলম বলেন, আমরা প্রতিটি হাট তদারকি করছি যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়। এছাড়াও, হাসিল নিয়ে যাতে কোনো সমস্যা না হয় তাই আমরা প্রকাশ্যে হাসিল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছি।