চলতি বছর বিশ্বজুড়েই রেকর্ড করতে যাচ্ছে মশাবাহিত ভাইরাস জ্বর ‘ডেঙ্গু’। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অতিবর্ষণজনিত কারণে বন্যার প্রকোপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর বিস্তার। আক্রান্ত রোগীর হিসেবে চলতি বছরই বিশ্বজুড়ে এই রোগটি রেকর্ড করতে পারে। এদিকে, দেশেও ডেঙ্গুর প্রকোপ দিনকে-দিন বেড়েই চলছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি বছরে ‘শক সিনড্রোম’র কারণে ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যু হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তচাপ দ্রুত কমে যায়। রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে রোগীর শারীরিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হয়ে পড়ে। এবছর রোগীদের মধ্যে ‘শক সিনড্রোম’ বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও জানান এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
‘শক সিনড্রোম’র উপসর্গ
শক সিনড্রোমের উপসর্গ হলো শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়া কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া; ত্বক ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, ত্বকের ভেতরের অংশে রক্তক্ষরণের কারণে ত্বকের ওপর লাল ছোপ সৃষ্টি হওয়া। বমি, মল কিংবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রচণ্ড পেটব্যথা ও অনবরত বমি হওয়া; নাক ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ ও অবসাদ। কখনো মস্তিষ্কের ভেতর রক্তক্ষরণ হতে পারে। ডেঙ্গু আক্রান্ত কারও এরকম শারীরিক অবনতি ঘটলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
করণীয়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ডেঙ্গুরোগীর জ্বর ১০২ ডিগ্রির নিচে থাকলে ৬ ঘণ্টা পরপর প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে। আর ১০২-এর ওপরে গেলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি দিতে হবে। বেশি বেশি ডাবের পানি, স্যালাইন ও ফলের জুস খাওয়াতে হবে। খাওয়ার রুচি না থাকলেও জোর করে খাওয়াতে হবে। রোগীকে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনও ব্যথার ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। কারণ, ব্যথানাশক কোনও ওষুধ খেলে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এমনকি রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু সেরে যায়। তারপরও হেমোরেজিক ফিভারের মধ্যে এক ধরনের রোগী রক্তপাত নিয়ে আসতে পারে। আরেক ধরনের রোগী সরাসরি শকে চলে যেতে পারে। হেমোরেজিক ফিভারের মধ্যে যারা শকে চলে যাচ্ছে, তাদের এক্সটেনডেট ডেঙ্গু ‘শক সিনড্রম’। যা হলো অস্থিতিশীল বা ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের রোগীদের মৃত্যুও হতে পারে। তাই, দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।’’
স্বাস্থ্য বিভাগের সতর্কবার্তা
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আগাম যে সতর্কবার্তা দিয়েছিল, বাস্তব পরিস্থিতি তার চেয়েও খারাপ হচ্ছে দিন দিন। এর আগে জুলাইয়ের ২০ তারিখ পর্যন্ত কখনও ডেঙ্গুতে এত আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়নি। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৭ হাজার ৫৪৭ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই খোদ রাজধানীর বাসিন্দা। আর ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৫৫ জন।
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, বেশিরভাগ নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে- চলতি বছর ডেঙ্গুর ‘ডেন-২’ ধরনে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ৬২ শতাংশ রোগীই ডেঙ্গুর ‘ডেন-২’ ধরনে আক্রান্ত। আর ৩৮ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছেন ‘ডেন-৩’ ধরনে।
ডেঙ্গুতে প্রতিদিনই দেশব্যাপী আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বলছে, ডেঙ্গু সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এবং এর আশপাশের এলাকা। মোট আক্রান্ত রোগীর ১৩ শতাংশই এই এলাকার বাসিন্দা। সারা দেশের আক্রান্ত রোগীর ৩৮ শতাংশ রাজধানী ঢাকার আটটি এলাকার বাসিন্দা। অর্থাৎ রাজধানীতে আটটি এলাকা ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছে।
সবচেয়ে বেশি রোগী মুগদা হাসপাতালে
ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরিকল্পনায় ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু একসময় মৌসুমি রোগ মনে করা হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুর ধারাবাহিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর প্রকোপ লক্ষ করা যাচ্ছে। ডেঙ্গু ভাইরাস আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা সেদিকে তেমন নজর না দেওয়া এবং ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই ভাইরাসটি মারাত্মক হয়ে উঠেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এ হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর ২৪ শতাংশ ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের ৭৬ শতাংশ চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকার অন্য ১৬টি হাসপাতালে। দ্বিতীয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১ শতাংশ রোগী। ৯ শতাংশ করে রোগী ভর্তি হয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালের মধ্যে এরপর পর্যায়ক্রমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩ শতাংশ, ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালে ২ শতাংশ করে রোগী ভর্তি হয়েছেন। ১ শতাংশ করে রোগী ভর্তি হয়েছেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। সারা দেশে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন রাজধানীর ৯ সরকারি হাসপাতালে।
অন্যদিকে, বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে আজগর আলী হাসপাতাল ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ৪ শতাংশ, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩ শতাংশ, সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং গ্রিন লাইফ হাসপাতালে ২ শতাংশ করে রোগী ভর্তি হয়েছেন। ১৯ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন রাজধানীর ৭ বেসরকারি হাসপাতালে। মোট কথা, রাজধানীর ১৬টি সরকারি- বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্তদের ৭৬ শতাংশ চিকিৎসা নিয়েছেন। সবমিলিয়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছে পুরো স্বাস্থ্য বিভাগ।
রাজধানীর শীর্ষে যাত্রাবাড়ী
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। সারা দেশে যত রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন, তার ১৩ শতাংশ যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। আক্রান্তের দিক থেকে রাজধানীর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছ মুগদা এলাকা। এখানকার ৫ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তৃতীয় উত্তরা ও জুরাইন এলাকায় ৪ শতাংশ করে মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। কদমতলী, মোহাম্মদপুর, মানিকনগর ও কেরানীগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ শতাংশ করে মানুষ। অর্থাৎ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের ৩৮ শতাংশই এই আট এলাকার বাসিন্দা। দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। আর ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৭৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ ঢাকার বাসিন্দা। আর ঢাকার বাইরের ২২ দশমিক ৬১ শতাংশ।
মাস হিসেবে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীদের ৭১ শতাংশই জুলাই মাসের ২০ দিনে আক্রান্ত হয়েছে। জুনে ২৮ শতাংশ, মে মাসে ৭ শতাংশ, এপ্রিলে ৫ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে ২ শতাংশ রোগী ডেঙ্গু সংক্রমিত হয়েছে। আক্রান্তের মধ্যে জুলাই মাসের ২০ দিনে মারা গেছে ৬৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ আর নারী ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে ২৭ শতাংশের বয়স ১৯ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। আর ১০ থেকে ১৮ বছর এবং ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সি ১৮ শতাংশ করে। ৪০ থেকে ৪৯ বছর বয়সি ১০ শতাংশ, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সি ৯ শতাংশ, ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সি ৭ শতাংশ, ১ থেকে ৪ বছর বয়সি ৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সি ৪ শতাংশ।
তবে ডেঙ্গু বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা যথেষ্ট পরিমাণে নজর দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মশা দমনে নেই কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ
বিএসএমএমইউ’র সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশন মশা মারা আর স্বাস্থ্য বিভাগ চিকিৎসা সামলানোর দায়িত্ব পালন করছেন। তারা ব্যর্থতার একে অন্যকে দায়ী করে বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ যতটুকু নেওয়া দরকার, ততটুকু নিচ্ছেন না। মশা দমনে দেশজুড়ে বড় ধরনের কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এমনকি, মশা দমনে তারা যেসব ওষুধ ব্যবহার করছেন, সেসবের সঠিক কার্যকারিতা আছে কি না, তা নিয়েও মানুষের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ এখন পর্যন্ত ভাইরাসজনিত রোগ ডেঙ্গু নিয়ে কোনও কার্যকর গবেষণা করতে পারেনি। এমনকি, নজরদারিও নেই। আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের তথ্য সরবরাহ করছেন কেবল। এর বাইরেও অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়ে ঘরে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের তথ্য তাদের কাছে নেই। কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ হলেও সেদিকে তেমন গুরুত্ব দেননি তারা। এ কারণে পরিপূর্ণ মৌসুমের আগে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলেও মনে করেন এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ও এর কার্যক্রম বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু তার স্বাভাবিক রূপ বদল করে ফেললেও স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশন রূপ বদল করতে পারেনি। ডেঙ্গু মোকাবিলায় তারা অনেকটা গতানুগতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এ কারণেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের যেভাবে উদ্যোগ নেওয়ার দরকার ছিল, তারা সেটি করতে পারেননি বা ব্যর্থ হয়েছেন বলে মনে করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক, ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ জানান, ঢাকার বাইরে প্রায় সব জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুই বছরের তুলনায় এবার গ্রামাঞ্চলে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ডেঙ্গু এ হারে ছড়াতে থাকলে আগামীতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সুতরাং ঢাকা শহরের পাশাপাশি বাইরের জেলা এবং গ্রামেও সমান তালে নজরদারি বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
যা বললেন সংশ্লিষ্টরা
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা করোনার পরিস্থিতির মতো হলে সামাল দিতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। সুতরাং সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, বাসাবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখবেন। মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারি ব্যবহার করতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন জানান, ডিএনসিসির পক্ষ থেকে এক মাসের ডেঙ্গু বিষয়ক বিশেষ অভিযানে গত ৮ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত মোট ১১ দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৫৭টি মামলায় জরিমানা আদায় করেছেন, ১ কোটি ১৪ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা। এর পাশাপাশি নগরবাসীকে এডিস মশার লার্ভা ও প্রজনন স্থান সম্পর্কে নিয়মিত সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। এর পাশাপাশি সামাজিকভাবে নগরবাসীকে আরও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। আমরা জরিমানা করতে চাই না। এটা কোনও সমাধানও নয়। আমাদের কার্যক্রমের পাশাপাশি নগরবাসীর সচেতনতার বিকল্প নেই। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ভবনের পাশাপাশি নির্মাণাধীন অনেক স্থানেও এডিস মশার লার্ভা রয়েছে, এই মর্মে ডিএনসিসি কল সেন্টারে নিয়মিত কল আসছে। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’