সারা বাংলা

জোয়ারে নিঝুম দ্বীপের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, নৌ যোগাযোগ বন্ধ

বৈরী আবহাওয়া ও মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে গত দুই দিন ধরে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে ৩-৪ ফুট জোয়ারের পানিতে উপজেলার নিঝুম দ্বীপসহ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।  

বাতাসের গতি বেশি থাকায় বুধবার (২ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো ঘাট থেকে কোনো স্পিডবোট কিংবা যাত্রীবাহী ট্রলার হাতিয়া থেকে ছেড়ে যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে প্রবল বাতাসসহ বৃষ্টি হচ্ছে হাতিয়ায়। সাগর উত্তাল থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারে নলচিরা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা বাড়ি ঘর ও দোকানে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও তলিয়ে গেছে হাতিয়ার মূলভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন নিঝুম দ্বীপ, ঢালচর ও চরগাসিয়ার বেশিরভাগ এলাকা।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন জানান, এই দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ নেই। ফলে নিচু এলাকার গ্রামগুলো সহজে প্লাবিত হয়। বুধবার মেঘনা নদীর জোয়ারের কারণে মদিনা গ্রাম, ডুবার খাল এলাকা, বন্দরটিলা গ্রাম ও চেউয়াখালী গ্রামে ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়কটি ছাড়া অধিকাংশ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

নলচিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইউনুছ জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে তুপানিয়া গ্রামের বেশিরভাগ অংশ। বেড়িবাঁধের বাইরে হওয়ায় সহজে জোয়ারে পানিতে তলিয়ে যায় এই গ্রাম। নলচিরা ঘাট এলাকার অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। এতে ব্যবসায়ীরা মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

চরগাসিয়া জনতা বাজারের ব্যবসায়ী মাকসুদ জানান, বাজারের মাঠ ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে দোকানের ভিটি সমান পানি হলেও দোকানে এখনো পানি ওঠেনি। রাতের জোয়ারে দোকানঘরে পানি প্রবেশের সম্ভবনা আছে। এছাড়া চরের অনেক এলাকায় ৪-৫ ফুট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এতে চরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষজন জরুরী প্রয়োজনে হাঁটবাজারে আসতে পারছেন না। সবাই নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাতাসের গতি বেশি থাকায় ও নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে আজ বুধবার ঘাট থেকে কোনো স্পিডবোট কিংবা যাত্রীবাহী ট্রলার ছেড়ে যায়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করার কারণে গতকাল মঙ্গলবার দিনভর স্পিডবোট ও ট্রলার হাতিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকেও কোনো নৌযান ছেড়ে আসেনি।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কায়সার খসরু বলেন, বিভিন্ন এলাকায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার সংবাদ এসেছে। আমি ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলেছি। মানুষের যেন ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকার জন্য বলা হয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা মানুষদের নিরাপদে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।