সারা বাংলা

বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি 

বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো থেকে। তবে বান্দরবান শহরের অধিকাংশ এলাকায় এখনো হাটু পরিমাণ পানি জমে রয়েছে। এদিকে, পাহাড় ধস এবং সড়কে পানি জমে থাকায় জেলা শহরের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং জেলার সব উপজেলার সড়ক যোগাযোগ এখনও বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা জানান, আপাতত টানা বৃষ্টি বন্ধ হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টির পর বুধবার সকালে ঝলমলে রোদ দেখা গেলেও বিকেলের পর আবারও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়।

আজ সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় জমে আছে কাদামাটি। কোথাও কোথাও পাহাড় ধসে রাস্তায় পড়ে রয়েছে মাটির স্তূপ। শহরের অভ্যন্তরীণ সড়ক ছাড়া কোথাও কোথাও যান চলাচল করতেও দেখা গেছে। বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার পরপরই স্থানীয় লোকজন নিজেদের দোকান, বাড়িঘর পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সড়ক এবং বাড়ির আশপাশে জমে থাকা কাদামাটি সরিয়ে নিতে দেখো গেঝে তাদের।

বান্দরবান বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কাদাপানি সরিয়ে নেওয়া হলেও পুরোপুরি এখনো সবকিছু পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। পরিষ্কার পানি ছাড়া উপায় নেই।  বিদ্যুৎ না আসা পর্যন্ত এভাবেই থাকতে হবে। 

শ্যামলী পরিবহনের সুপারবাইজার সৌরভ জানান, নতুন করে ভারী বৃষ্টি না হলে আজ বুধরাত রাত থেকে শ্যামলী বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

পূরবী বাস কাউন্টারে ম্যানেজার মহসিন জানান, সড়কে কোথাও কোথাও বুকসমান পানি থাকায় গাড়ি চলাচল ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম উদ্দেশ্যে পূরবী-পুর্বাণী বাস নিয়মিত চলাচল করবে। 

উমংচিং মারমা জানান, টানা বৃষ্টির কারনে বান্দরবান শহরে রোববার (৬ আগস্ট) রাত থেকে বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সেবা এখনও বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। 

বান্দরবান বিদ্যুৎ অফিসের মো. নাছির উদ্দিন নামে এক কর্মচারী সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যুৎ অফিসের প্রকৌশলীরা সকাল থেকে যার যার লাইনে গেছেন। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন তদারকি করছেন তারা। এখানে মেইন ট্রান্সফরমার পানির নিচে ছিল। এগুলো ঠিক করার জন্য ঢাকা থেকে একটা কারিগরি টিম আসার কথা। তারা এসে ঠিক না করা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবার চালু করার কোনো সুযোগ নেই।

আজ দুপুরে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে। তবে দুর্যোগকালীন পরিস্থিতি পর এখন দুর্যোগ পরবর্তী কাজ নিয়ে সামনের দিকে এগনো হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশ্রয় নেওয়া লোকজনদের শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি দেওয়া হচ্ছে। তারপরও কোনো পরিবার যাতে অনাহারে না থাকে সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীও প্রশাসনের সঙ্গে মিলে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।