সারা বাংলা

খুমেকে তালা দিলেন শিক্ষার্থীরা, বিক্ষোভে ওষুধ ব্যবসায়ীরা

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। একই দাবিতে ধর্মঘট করছেন হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকানিরা। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজন।

বুধবার (১৬ আগস্ট) সকাল পৌনে ১১টার দিকে ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। তারা কলেজ ভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। 

এদিকে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সাইফুল ইসলাম অন্তর। তিনি জানান, হামলায় তাদের ১৪-১৫ জন আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে খুলনা মেডিকেলের সামনে ওষুধের ৯০টি দোকান। হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির খুলনা শাখা। 

বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি খুলনা শাখার সহ-সভাপতি এস এম কবীর উদ্দিন বাবলু বলেন, হামলায় তাদের ১০-১২ দোকান মালিক ও কর্মচারী আহত হন।  

খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, দুই পক্ষের বিরোধের বলি হচ্ছেন তারা। সোমবার রাত থেকে রোগী দেখছেন না ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। আগে দিনে ২-৩ বার রোগী দেখতেন তারা। আর মেডিকেলের সামনের দোকান বন্ধ থাকায় রোগীর স্বজনদের ওষুধ কিনতে যেতে হচ্ছে দূরে। এতে অতিরিক্ত সময়ের পাশাপাশি ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তিন দফা দাবিতে তারা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন। দাবির মধ্যে রয়েছে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুইটি মডেল ফার্মেসি ও পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফী বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হবে। বিষয়টির সমধানের চেস্টা চলছে।

সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িতদের আটক করার চেষ্টা চলছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে খুলনা মেডিকেলের সামনে বিপ্লব মেডিসিন কর্নারে ওষুধ কিনতে যান মেডিকেলের শিক্ষার্থী হাসান ফেরদৌস। দোকানি এক পাতা ওষুধের দাম ৭০ টাকা জানালে হাসান ফেরদৌস ১০ শতাংশ কমিশন বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দোকান মালিক বিপ্লব তাকে অপমান করেন। এরপর ওই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে গিয়ে জানালে অন্য শিক্ষার্থীরা ওই দোকানে যান। তখন কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওষুধের দোকানিদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এ ঘটনার পর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার রাত থেকেই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।