সারা বাংলা

১২ দিন বন্ধ রুমা-থানচি সড়ক যোগাযোগ, নৌ পথই ভরসা

 

টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বান্দারবান জেলার। বন্যায় লোকালয় তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। সড়ক ধসের কারণে টানা ১২ দিন ধরে জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে রুমা ও থানছি উপজেলা। কবে থেকে এই দুই উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোড়াযোগ শুরু হবে সে ব্যাপারটিও এখনো নিশ্চিত নয়।

এদিকে, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর থেকে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে দুই উপজেলায় যেতে হচ্ছে সবাইকে। এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল, সরকারি-বেসকারি সব কাজই এখন হচ্ছে নৌপথে।

শনিবার (১৯ আগস্ট) সাঙ্গু নদীর বান্দরবান বাজারের নৌকাঘাট ও ক্যচিংঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটগুলোতে ভিড় করছে বিভিন্ন প্রকারের নৌকা। জেলা শহর থেকে এসব নৌকায় দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তুলতে দেখা যায়। কয়েকটা পণ্যবোঝাই নৌকা ঘাট ছেড়ে বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে রওনা দিতেও দেখা গেছে। যাত্রী ধরতে ব্যস্ত দেখা যায় নৌকা চালকদের।

নৌঘাটে বসে থাকা মংবাসিং মারমা নামের এক ব্যক্তি বলেন, চলতি আগস্ট মাসের ২-৯ তারিখ পর্যন্ত টানা আট দিন ভারী বর্ষণে রুমা ও থানছি সড়কের অনেক স্থান  ভেঙে গেছে। গত ১২ দিন ধরে এ দুই উপজেলার মানুষ নৌপথেই যাতায়াত করছেন।

বান্দরবান সদরে চিকিৎসার জন্য আসা থানচির রেম্রাক্রি এলাকার বাসিন্দা কেনুং মার্মা বলেন, থানচি থেকে বান্দরবান আসতে নৌকা ভাড়া গুনতে হয়েছে ১ হাজার টাকা। রুমার ভাড়া ৩৫০ টাকা। 

বান্দরবান-রুমা-থানচি নৌপথে লাইনম্যান বুলবুল চৌধুরী বলেন, ২০-২৫ বছর আগে থানচি ও রুমা নৌপথে ছাড়া যাওয়া যেত না। এবারের বন্যার পর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় ঘাটগুলো যেন আবারও তার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্যায় ও পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ২৮৭ কিলোমিটার সড়ক। এর মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার এলজিইডি, ২২ কিলোমিটার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এবং ১৫ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথের অধীন। কবে থেকে শুরু করা যাবে সড়ক পথে যোগাযোগ, সে ব্যাপারেও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পরছেন না সংশ্লিষ্টরা।

এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউল ইসলাম মজুমদার বলেন, জেলার সব উপজেলার সড়ক কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক মেরামত করতে ১৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন। বরাদ্দ আসলে খুব দ্রুত কাজ শুরু করবেন বলেও জানান তিনি। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইয়াছিন আরাফাত জানান, উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৪২টি সড়কের মদ্যে ২২টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সড়ক মেরামত করতে প্রায় ৪২ কোটি টাকার প্রয়োজন।