সারা বাংলা

বান্দরবানে উপজেলা চেয়ারম্যান কালামের বিরুদ্ধে মানবপাচার মামলা

বান্দরবান আলীকদমের জলন্ত মনি পাড়ার সরকারি আশ্রয় প্রকল্পে থাকেন রাজু তংচংগ্যা (৪০)। তিনি সাদ্দাম হোসেনের গরু আনা-নেওয়ার শ্রমিক হিসেবে আলীকদম করুকপাতা বর্ডার থেকে গরু আনতে গিয়ে গত ২৫ দিন ধরে মিয়ানমারের চোরাকারবারিদের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন। 

রাজুর স্ত্রী গতকাল বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) তার স্বামীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নির্যাতনের ভিডিওতে জানতে পারেন, সাদ্দাম হোসেন ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামের যোগসাজশে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে চোরাকারবারিদের কাছে রাজু তংচংগ্যাকে জিম্মায় রেখে বাকিতে মহিষ নিয়ে আসেন। 

এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বান্দরবান জেলা আদালতে ‘মানবপাচার অপরাধ প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২’-এর ধারায় সাদ্দাম হোসেন ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামসহ তিন জনের বিরুদ্ধে রাজুর স্ত্রী পরণ মালা তংচংগ্যা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।   

আদালত সূত্রে জানা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা এ মামলা আমলে নিয়ে ভুক্তভোগী রাজু তংচংগ্যাকে উদ্ধার ও মামলা তদন্তের জন্য আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত আসামি সাদ্দাম হোসেন আলীকদম উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করেন। তার তত্ত্বাবধানে রাজু তংচংগ্যা বর্ডার থেকে দৈনিক বেতনে গরু আনা-নেওয়ার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত ১৩ আগস্ট সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা পোয়ামুহুরী হতে গরু আনতে হবে বলে যান রাজু। দীর্ঘ দিন তার স্বামীর রাজু তংচংগ্যার খবর না পাওয়ায় সাদ্দাম হোসেন ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানানো হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান রাজুকে ফিরিয়ে আনবে বলে আশ্বাস দিলেও এভাবে ২৫ দিন পেরিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর স্ত্রী পরণ মালা তংচংগ্যা বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় লোকজনের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তার স্বামী রাজু তংচংগ্যাকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের দুটি ভিডিওতে জানতে পারেন, সাদ্দাম হোসেন ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামের যোগসাজশে রাজুর আর্থ-সামাজিক অসহায়ত্ব ব্যবহার করে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে রাজু তংচংগ্যাকে জিম্মায় রেখে বাকিতে মহিষ নিয়ে আসে। মহিষ বিক্রির পরে বকেয়া টাকা পরিশোধ করে রাজুকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা বকেয়া টাকা পরিশোধ করেননি। সাদ্দাম হোসেন ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে গরু পাচারকারীদের আর্থিক লেনদেনের কারণে রাজুকে মিয়ানমারে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।