সারা বাংলা

টাঙ্গাইলে নৌকা বাইচ উপভোগ করলেন হাজারো মানুষ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বাসুলিয়া খ্যাত চাপড়া বিলে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এসময় বিলের পাড়ে হাজির হয়েছিলেন হাজারো নারী ও মানুষ।

‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মালেক মিঞা’ স্মৃতিতে এই নৌকা বাইচের আয়োজন করে উপজেলার আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক আখতার হোসেন। 

প্রতিযোগিতায় টাঙ্গাইলের আশপাশের উপজেলা ছাড়াও সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার অর্ধশতাধিক নৌকা অংশ নেয়।

সরেজমিন দেখা যায়, ঢাক-ঢোলের তালে গ্রাম বাংলার বিভিন্ন গান গেয়ে মাঝিরা মাতিয়ে তুলেছেন বাসুলিয়ার চাপড়া বিলের শান্ত পানি। আল্লাহ ভরসা, মায়ের দোয়া, সোনার তরী, ফুলের তরী, হীরার তরী, আদর্শ তরী, ময়ূর পঙ্খী, পঙ্খীরাজ ও জলপরী নামের বিশাল আকৃতির নৌকার পাশাপাশি বিভিন্ন নাম ও রঙের ডিঙি, কুশা, সিপাই, খেলনা, অলংগা নামের অসংখ্য ছোট নৌকা অংশগ্রহণ করে প্রতিযোগিতায়। ছোট, বড় ও মাঝারি নৌকা নিয়ে পৃথক পৃথক কয়েক রাউন্ডে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

সখীপুরের বেড়বাড়ী থেকে আসা গৃহবধূ রোজিনা বেগম বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। প্রতিযোগিতাটি দেখতে খুবই ভালো লাগছে। প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজন করলে আমরা আরও আনন্দ উপভোগ করতে পারবো।

বাসাইল সদরের ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান বলেন, এই নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে আমাদের এলাকায় উৎসবের আয়োজন চলছে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আত্মীয় স্বজনরা এসেছেন। ঈদের ছুটিতেও এতো আত্মীয় স্বজন আসে না।

সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের বলেন, নৌকা আমার অস্তিত্ব, বাংলাদেশ আমার অস্তিত্ব, বঙ্গবন্ধু আমার অস্তিত্ব। এরই আলোকে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ ধারাবাহিতা ভবিষ্যতেও অব্যহত থাকবে।

প্রতিযোগিতায় মা-বাবার দোয়া নামের নৌকা চ্যাম্পিয়ন হয়। এ নৌকার মালিক প্রথম পুরস্কার হিসেবে মোটরসাইকেল পান। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে চাচা-ভাতিজা নামের নৌকাটি। এ নৌকার মালিককে ফ্রিজ দেওয়া হয়। এছাড়াও অংশ গ্রহণকারী প্রত্যেকটি নৌকাকেই আকর্ষনীয় পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ওলিউজ্জামানের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন- অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আমিন শরিফ সুপন, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কিডনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এম. এ সামাদ, বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া আক্তার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউস, সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিক এবং নৌকা বাইচ কমিটির সদস্য সচিব সোহানুর রহমান সোহেল।