আশ্বিনের প্রথম সপ্তাহেই প্রকৃতির এমন খারাপ থাকবে কে জানত? সকালে ভাদ্র মাসের তালপাকা রোদ, দুপুর-সন্ধ্যা রাতে ভারি বৃষ্টি ও মধ্যরাতে ভ্যাপসা গরম। অথচ এ মাসের শুরুতে শীতের একটু আভা চলে আসে। সকালে দেখতে পাওয়ার কথা মিষ্টি রোদ। কিন্তু প্রকৃতি এখন গুমোট। থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি। যা ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জনজীবন।
প্রকৃতির এমন মন খারাপের দিনে পণ্ড বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে। বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে কিছু সময় খেলা হয়েছিল। ওইটুকু সময়ে মিরপুরে শোনা গিয়েছিল ব্যাট-বলের ঠুকঠাক শব্দ। বাকিটা সময়ে স্রেফ বেরসিক বৃষ্টির দাপট। তাতে দুই দলের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হলো কোনো রোমাঞ্চ-উত্তেজনা ছাড়াই।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে ১৩৬ রান করে। এরপর বৃষ্টি বাধ সাধলে সব ওলটপালট। রাত ৮টা ২৬ মিনিটে অফিসিয়ালরা ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। ওই সময়েও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। কিন্তু মিনিট দশেক পর ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি ভাসিয়ে দিয়ে যায় মিরপুরের সবুজ গালিচা। মাঠ কর্মীদের দুর্দশা। একটু পরপরই তাদের নেমে যেতে হয়েছিল উইকেট বাঁচাতে। ত্রিপল দিয়ে উইকেটের আশেপাশে ত্রিশ গজ ঢাকার পর বাতাসের কারণে মাঠ কাভার করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে তাদেরকে। নিশ্চিত পরাজয়ের থেকে কি নিউ জিল্যান্ডকে বাঁচাল বৃষ্টি?
নাহ, এমন আকাশ কুসুম চিন্তা করাও ভুল হবে। কারণ এমন কন্ডিশনে আর উইকেটে বাংলাদেশের কিন্তু বিদঘুটে পরাজয়কে সঙ্গী করার রেকর্ডও রয়েছে। বৃষ্টিতে ৪২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে নিউ জিল্যান্ড ৩৩.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৬ রান করলেও এই কন্ডিশনে লড়াকু পুঁজি পেয়েছিল তারা। নতুন বলে মোস্তাফিজ ফিন অ্যালেন ও চাড বোয়েসকে দ্রুত ফেরালে বিপদে পড়ে সফরকারীরা।
১৬ রানে ২ উইকেট হারানো কিউইরা তৃতীয় উইকেট জুটিতে ম্যাচে ফেরে। ১১৭ বলে ৯৭ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন নিকোলস-ইয়াং । এ জুটি মোস্তাফিজ নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ভাঙেন। তার ভেতরে ঢোকানো বলে এলবিডব্লিউ হন ৪৪ রান করা নিকোলস। এরপর নাসুমের স্পিন ভেল্কিতে এক ওভারে দুই উইকেট হারায় নিউ জিল্যান্ড। বাঁহাতি স্পিনারকে এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হন ৫৮ রান করা ইয়ং। নতুন ব্যাটসম্যান রাচিন রাভিন্দ্রা নিজের দ্বিতীয় বলে সুইপ করতে গিয়ে হন এলবিডব্লিউ। তাকে ফেরাতে অবশ্য রিভিউ নিতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ওখানেই সব শেষ।
এরপর বৃষ্টিতে পণ্ড দুই দলের লড়াই। আম্পায়াররা খুব বেশি সময় অপেক্ষা করেননি। অপেক্ষা করলেও তেমন লাভ হতো না। ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণার পর মুষলধারে যেভাবে বৃষ্টি হয়েছে তাতে বৃষ্টিবিলাস ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
শনিবার দুই দল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে। সেই ম্যাচেও আছে বৃষ্টির চোখ রাঙানি। এই ম্যাচগুলো দলে ফেরা তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকারদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেতে তাদের পারফরম্যান্সের মঞ্চ প্রয়োজন। কিন্তৃ আশ্বিনের এই বৃষ্টিতে তাদেরও বিশ্বকাপ স্বপ্ন ভাসিয়ে দেয় কিনা কে জানে?