রাজনীতি

খালেদা জিয়ার কিছু হলে কারো অস্তিত্ব দেশে রাখবো না: আব্বাস

খালেদা জিয়াকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশে না পাঠালে এবং এর মধ্যে তার কিছু হলে পরিণতি শুভ হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেন, আমি আবারো অনুরোধ জানিয়ে বলছি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা সময় চলে গেছে। আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে যেন দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এই হুঁশিয়ারি দেন।

এ সময় তিনি বলেন, একটা কথা আমি আবারো বলছি, এই অবস্থায় দেশনেত্রীর যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে আপনাদের কারো কোনো অস্তিত্ব বাংলাদেশে আমরা রাখবো না।

গত ৯ আগস্ট থেকে খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার জন্য গঠিন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বলেছেন, তার অবস্থা সংকটজনক। লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি।

মির্জা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমার আসলে বুঝতে পারিনি-যেদিন নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেদিন থেকেই তাকে হত্যার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এই গ্রেপ্তার ছিলো তাকে হত্যা করার জন্য।

‘আসলে উনাকে গ্রেপ্তার করে অসুস্থ বানিয়ে, তারপর মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন-এটাই ছিলো তাদের প্ল্যান। সেই প্ল্যান এখন কার্যকর করছে। আর না হলে কিভাবে অমানুষের মতো, অমানবিকতার মতো একটা কথা বলেন, খালেদা জিয়াকে বাইরে পাঠানোর কোনো সুযোগ নাই, আইনের জটিলতা আছে।’

তিনি বলেন, একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পৃথিবীর কোনো আইন-টাইন কাজে লাগে না। যখন জীবন বাঁচোনোর প্রয়োজন হয় তখন তার জন্য যে চিকিৎসা দরকার, যেখানে চিকিৎসা দরকার, যেটা করা দরকার। এটা হলো মানবিক এটা আইন। আন্তর্জাতিক জেনেভার কনভেনশনের একটা আইন আছে, সেই আইনে উনি চিকিৎসা পেতে পারেন। অথচ তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা আশা করছি, সরকার এই সুযোগটা নেবেন। তারা দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার সুযোগ করে দেবেন।

কারাবন্দি নেতাদের বিদেশে পাঠানোর অতীত উদাহরণ তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, গতকাল আমাদের মহাসচিব বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উনাকে বিদেশে পাঠাতে হবে। আজকে দেখলাম উনারা (সরকার) বলছেন, আইনের জটিলতা আছে। আমি আজকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে আ স ম আবদুর রবকে জার্মান পাঠানো হয়েছিলো। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে রাশেদ খান মেননকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তখন তার লিভার টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিলো, তাকে সুস্থ করা হয়েছিল। অথচ এই লোক আজকে বিএনপির বিরুদ্ধে, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, হাজী সেলিম ব্যাংকক গেলো, চিকিৎসা করে ফেরত আসলো সেটা কিভাবে? সে এখন বাইরে আছে, সহিসালামতে আছে। মহিউদ্দিন খান আলমগীর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, বাইরে ঘুরাফেরা করছে। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, সেও বাইরে ঘুরাফেরা করছে। অথচ আমাদের নেত্রী যিনি কোনো অপরাধ করেননি- তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে দিচ্ছে না।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় ৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য ও ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে অসুস্থ খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

মিলাদ মাহফিলে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, ফজলুল হক মিলন, শিরিন সুলতানা, আসাদুর রহমান খান, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।