দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে বিপর্যস্ত নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মাস শেষে হিসাব মেলাতে বিপাকে পড়ছেন এসব মানুষ। ঠিক এ সময়ে দুঃস্থ মানুষের জন্য কল্যাণমুখী উদ্যোগ নেওয়া হলে তা যেন আশীর্বাদের মতো। এমনই এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। তাঁদের ধারাবাহিক আয়োজন এবার এসেছে রাজশাহী শহরে।
‘৫ টাকার হাট’ নামের এই উদ্যোগের আয়োজন করা হয় বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর)। শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত বিশেষ এই বাজারে ছিল নানা রকম পণ্য। এগুলো দাম ছিলো এক থেকে পাঁচ টাকার মধ্যে। বঞ্চিত মানুষের জন্য আয়োজিত বিশেষ এই হাটে ছিল- চাল, ডাল, তেল, আটা, লবণ, ডিম, মুরগি, মাছ, শাকসবজি, স্যান্ডেল, টি শার্ট, বাচ্চাদের শিক্ষা সামগ্রীসহ নানা পণ্য। এমন প্রতিকী মূল্যের বাজারের ব্যবস্থা দেখে ক্রেতাদের মধ্যেও বেশ আগ্রহ দেখা যায়। তারা এমন আয়োজন দেখে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আয়োজকদের।
আজ সকালে বিদ্যানন্দের মানবিক ও ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিসুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুখ আহমেদ সভাপতিত্ব করেন।
দিনব্যাপী এই বিশেষ বাজারে প্রায় ২২০টি পরিবার বাজার করার সুযোগ পেয়েছেন। এ বাজার থেকে এক টাকায় এক কেজি চাল, দুই টাকায় এক কেজি ডাল, তিন টাকায় এক লিটার তেল, এক টাকায় ১ কেজি আলু, পাঁচ টাকায় একটি ব্রয়লার মুরগি এভাবে নানা রকম পণ্য কেনার সুবিধা পেয়েছেন দরিদ্র পরিবারগুলো। এই মূল্যে প্রতিটি পরিবার প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা সমমূল্যের বাজার কিনতে পারে এই হাট থেকে।
বিদ্যানন্দের রাজশাহী শাখাপ্রধান মৌসুমি আক্তার বলেন, আমাদের এখানে যে প্রতীকী দাম রাখা হয়েছে। এক টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পাঁচ টাকায় পণ্য পাওয়া গেছে এখানে। প্রতিটি পরিবার যেন সমান পরিমাণ জিনিস পায়, সেটা নিশ্চিত করতে আমরা কিছু নিয়ম করে দিয়েছি। ফলে যে যাই নিক, সমান ৭০০ টাকার পণ্যই পাবে এই নিয়মে। যেহেতু পণ্যের দাম এক থেকে পাঁচ টাকার মধ্যে, তাই এই হাটের নাম পাঁচ টাকার হাট।’
তিনি বলেন, ‘মূলত দরিদ্র মানুষকে পণ্য বাছাই করার স্বাধীনতা দেওয়ার জন্যই এই বাজারের আয়োজন। এই বাজারের সুবিধা যেন শুধু গরিবরা পায়, তা নিশ্চিত করতে বিদ্যানন্দের সদস্যরা আগেই বিভিন্ন এলাকায় সার্ভে করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের চিহ্নিত করে। তারাই এখান থেকে বাজার করতে পারবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক ভাবে এই আয়োজন করে চলেছে।’