সারা বাংলা

পঞ্চগড়ে দিনে ৩ বিয়ে বিচ্ছেদ

পঞ্চগড়ে বাড়তে শুরু করেছে তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা। গত দুই বছরে প্রত্যেক দিনে গড়ে ১৫টি বিবাহ নিবন্ধিত হলেও দৈনিক বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে তিনটি। অর্থাৎ, বিবাহের তুলনায় ২০ শতাংশ তালাকের ঘটনা ঘটেছে এ জেলায়। তালাক দিতে এগিয়ে আছেন নারীরা।

পঞ্চগড় জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে দেয়া তথ্যে এ পরিসংখ্যান পাওয়া যায়।

এ সব বিচ্ছেদের পেছনে পরকীয়া, যৌতুক, অপরিণত বয়সে বিয়ে, নৈতিক অবক্ষয়, ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব, মোবাইল ফোনের অপব্যবহার, দাম্পত্য কলহসহ বেশ কয়েকটি কারণ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

পঞ্চগড় জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলার ৫ উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা মিলে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৫ হাজার ৬৫১টি বিবাহ নিবন্ধিত হয়েছে। এর বিপরীতে তালাক হয়েছে ১ হাজার ১৫৯টি। একইভাবে ২০২১-২২ অর্থ বছরে বিবাহ নিবন্ধিত হয়েছিল ৬ হাজার ৭৪টি। আর বিচ্ছেদ হয়েছে ১ হাজার ১১৩টি। এই এক বছরের হিসাবে বিবাহ নিবন্ধন কমেছে ৪২৩টি, আর তালাক বেড়েছে ৪৬টি।

জেলার ৪৩টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় মোট ৪৭ জন নিকাহ রেজিস্ট্রার রয়েছেন। তারাই এই বিবাহ নিবন্ধন ও তালাকনামা সম্পন্ন করেছেন।

পঞ্চগড় পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা আরাফাত ইদ্রিস। একইসঙ্গে তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলা নিকাহ রেজিস্ট্রার সমিতির সভাপতি। আরাফাত ইদ্রিস বলেন, দুই বছরে পঞ্চগড় সদর উপজেলায় মোট ৬০৮টি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এসব বিচ্ছেদের অধিকাংশই মেয়েদের পক্ষ থেকে হয়েছে।

পঞ্চগড় জজ কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলন বলেন, প্রতিনিয়তই বিচ্ছেদ হচ্ছে। এসব পারিবারিক সমস্যা আদালত পর্যন্ত গড়াচ্ছে। মূলত দাম্পত্যকলহ দিয়ে শুরু হয়ে রূপ নেয় বিচ্ছেদে। যৌতুক, পরকীয়া এবং ছেলে মাদকাসক্ত হলে দাম্পত্যে কলহ হয়। এছাড়া ছেলেমেয়েদের অমতে বিয়ে, একে অপরের পছন্দ না হওয়া, পরিবারের অমতে গোপনে বিয়ে এবং অপরিণত বয়সের বিয়েগুলোও স্থায়ী হয় না। 

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, গ্রাম আদালত পরিচালনা করতে গিয়ে অনেক সময় বিচ্ছেদের বিষয়গুলোও সামনে আসে। নৈতিক অবক্ষয় এবং সামাজিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবের কারণে ছেলে-মেয়েরা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।