বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিপদ ধেয়ে আসছে। আমার ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন সঙ্কটময় দেশ দেখেনি। একবার যদি আগুনে লেগে যায়, জনগণ রাস্তায় নেমে গেলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পুলিশ থানা ছেড়ে পালাতে পারে। প্রশাসনের লোকজন ঘর, অফিস ছেড়ে পালাতে পারে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই সরকারকে বলতে চাচ্ছি, শেষের দিকে চলে এসেছেন। গত ১৫ বছর ধরে খারাপ কাজ করেছেন, যাওয়ার সময় একটু ভালো কাজ করেন। জনগণের দাবির অনুকূলে যদি আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পরাজয় স্বীকার করেন, এটাই ভালো হবে। ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া তা দেখিয়ে গিয়েছেন। তিনি আন্দোলনের সময় কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আইন পাস করে ক্ষমতা ছেড়েছেন। সুতরাং গণতন্ত্রের ইতিহাসে এটা গৌরবময় ঘটনা। আপনি (শেখ হাসিনা) তার পথ অনুসরণ করতে পারেন। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যেসব কাজ করেছেন, সেগুলোর দায় স্বীকার করেন। কেয়ারটেকার বাতিল করেছেন, পার্লামেন্টের দাঁড়িয়ে এটা আবারও বলতে পারেন, এটা ঠিক হয়নি। ভালোর উদ্দেশ্যে করেছিলাম, তবে ঠিক হয়নি। পার্লামেন্টে আমি ভুলের সংযোজন করছি। এগুলোর কারণে আপনি জনগণের অনেক কিছু থেকে রক্ষা পেতে পারেন। আরেকটি কাজ করতে পারেন, আপনি সরাসরি বিদেশ থেকে ফিরে খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়ে ভুল স্বীকার করে ‘সরি’ বলতে পারেন। এটা কোনো লজ্জার বিষয় নয়। আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে না। বললেই হবে, যা হওয়ার হয়েছে ‘সরি’। এখন আসেন কিভাবে জাতি, সমাজ, দেশ রক্ষা করা যায়, একসাথে কাজ করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আমেরিকায় অনিরাপদ বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন। এর একমাত্র সমাধান তত্ত্বাবধায়ক সরকার। জেদ করে লাভ নেই, নির্বাচন আপনি (শেখ হাসিনা) করতে পারবেন না। নির্বাচন করলে আপনি ফেঁসে যাবেন।
আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আজকে খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে শারীরিক মুক্তি না, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি, জনগণের মুক্তি। আজকে এই আন্দোলন জনগণের মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আপনাদের আমাদের দিকে তাকানোর সময় নেই।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি গোলাম সরোয়ার সরকার, জাতীয়বাদী সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আলাল মাহমুদসহ প্রমুখ।