সারা বাংলা

টানা বৃষ্টিতে খুলনায় জলাবদ্ধতা, বাসিন্দাদের দুর্ভোগ 

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি শ্রেণিকক্ষেও পানি জমে গেছে। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় নাকাল হচ্ছে। 

১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারকৃত মহানগরের মুজগুন্নী মহাসড়কটিও এখন পানিতে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় সড়কের আশপাশের দোকানপাট ও বাড়িঘরও ডুবে গেছে। সড়কের কোথাও কোমর পানি, কোথাও হাঁটু। পানিবন্দি এলাকার মানুষের ভোগান্তিও চরমে। 

সোমবার (২ অক্টোবর), মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ও বুধবার (৪ অক্টোবর) তিন দিন ধরে খুলনার আকাশজুড়ে চলছে মেঘ-বৃষ্টির খেলা। থেমে থেমে অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আর নগরের অধিকাংশ সড়ক ও ড্রেনের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় পানি নামতে পারেনি। ফলে অল্প বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ সড়ক। বৃষ্টির পানিতে অলিগলি ছাড়াও প্রধান প্রধান সড়ক পানিতে থৈ থৈ করছে। অধিকাংশ বাড়ি ও দোকানপাটের নিচতলা ডুবে গেছে। বৃষ্টি থামার পরও অনেক সড়কের পানি নামছে না। 

খুলনা আবহাওয়া অফিসের সূত্র জানান, ২ অক্টোবর নগরীতে সর্বোচ্চ ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। আর ৩ অক্টোবর রেকর্ড করা হয় ৪১ মিলিমিটার এবং ৪ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে মোট ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরিয়েছে খুলনার আকাশ। 

টানা বৃষ্টিতে অধিকাংশ সড়কে হাঁটুপানি জমে যায়। সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় কোথাও কোথাও সড়কে যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে যানজটে পড়তে হয়। বিশেষ করে নগরীর খালিশপুর বিআইডিসি রোড, বাস্তহারা, বাইতিপাড়া, শান্তিধাম মোড়, রয়্যাল মোড়, টুটপাড়া, স্যার ইকবাল রোড, শামসুর রহমান রোড ও পিটিআই মোড় পানিতে তলিয়ে গেছে। 

নগরীর বাইতিপারা এলাকার দোকানি শাহজাহান সিরাজ বলেন, বৃষ্টিতে এলাকার রাস্তা ও গলি পানিতে ডুবে গেছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা খুব খারাপ। ড্রেন ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। পানি নামতে সময় লাগছে। কষ্ট নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। 

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, সোমবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নগরীতে ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে আকাশে জমা মেঘমালা থেকে অবিরাম বৃষ্টি ঝরছে। তবে শুক্রবার নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৩নং সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে বলেও জানান তিনি।