সারা বাংলা

১৪০০ ফুটের মণ্ডপে থাকছে তিন শতাধিক প্রতিমা

পুকুরের ওপরে ১০ হাজার বাঁশ আর কাঠ দিয়েই বানানো হচ্ছে ১৪০০ ফুট মণ্ডপ। মণ্ডপটি তৈরিতে ৫০-৬০ জন শ্রমিক কাজ করছেন গত চার মাস ধরে। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামে তৈরি হচ্ছে এই মণ্ডপ। বিশাল এই মণ্ডপে থাকবে তিন শতাধিক প্রতিমা। এই আয়োজন চলবে লক্ষীপূজা পর্যন্ত। ব্যাতিক্রমী এই আয়োজন দেখতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ ভিড় করতে শুরু করেছেন।

আলোকদিয়া গ্রামের এই মণ্ডপ তৈরির কারিগর সুজিত কুমাত পাল বলেন, আমরা কয়েক মাস ধরে এখানে কাজ করছি। দুর্গাপূজার মহাষ্ঠীর আগেই এই কাজ শেষ করতে হবে। এতোবড় মণ্ডপ তৈরিতে কাজ করতে পেরে আমাদের সবারই ভালো লাগছে। আমরা সময়তো কাজ শেষ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

আলোকদিয়া সার্বজনিন পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি বিধান ভট্রাচার্য বলেন, গত কয়েক বছর করোনার জন্য আমরা বড় পরিসরে শারদীয় দূর্গাপূজার আয়োজন করতে পারিনি। এইবার করোনা না থাকায় আমরা বড় করে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছি। আমাদের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ধারণা করছি আমাদের এই মণ্ডপে দেশ-বিদেশের ৫ লাখ দর্শনার্থীর আগমন ঘটবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই মণ্ডপে থাকবে বর্তমান সরকারের তৈরি মেট্রোরেলের প্রতীকী। এছাড়াও থাকবে বিভিন্ন সময়ে জন্ম নেওয়া সনাতন ধর্মের ২০ জন মনীষী। মণ্ডপের মধ্যে প্রতিমা দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হবে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন দিক। দক্ষযজ্ঞ, সতীর দেহ ত্যাগ, সতীর দেহ থেকে ৫১টি তীর্থ ক্ষেত্র, শ্রীকৃষ্ণের কুঞ্জবন ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে শিল্পীর ছোঁয়ায়।

রাজবাড়ী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার দাস জানান, দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সবাই তৎপর। এবার জেলার ৪৪৩টি মন্দিরে ও মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সনাতন ধর্মালম্বী মানুষ দুর্গাপূজা যাতে উৎসব ও আনন্দের সঙ্গে পালন করতে পারেন এজন্য সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সতর্ক রয়েছে। শতভাগ পূজা মণ্ডপে না হলেও বেশির ভাগ মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। সংশ্লিষ্ট থানার ওসিসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর সম্বলিত ব্যানার টাঙানো হবে মণ্ডপগুলোতে। 

তিনি আরও বলেন, বালিয়াকান্দির জামালপুর ইউনিয়নের রতনদিয়ে গ্রামে বড় পরিসরে দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আমাদের তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা থাকবে।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে পূজা কমিটিগুলোর সঙ্গে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত নিশ্চিত করা হয়েছে।