সারা বাংলা

টাকার অভাবে বন্ধ শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা

টাকার অভাবে গত ১৮দিন ধরে বন্ধ রয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা। কয়েক মাসের বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় পেট্রোল পাম্প বাকিতে তেল সরবরাহ বন্ধ করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ থাকায় গুরুতর রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

এদিকে, কর্তৃপক্ষ বলছে, তেলের বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ফের চালু হবে অ্যাম্বুলেন্স সেবা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবগঞ্জের প্রায় সাত লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে কাজ করছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সব মিলিয়ে প্রতিদিন এই হাসপাতালটিতে প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোনো রোগীর শারিরীক অবস্থা অবনতি হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও ঢাকায় পাঠানো হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু, তেল বরাদ্দের অভাবে গত ৪ নভেম্বর থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি বন্ধ হয়ে যায়।

সম্প্রতি উপজেলার চককীর্তি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাইরে থেকে বাড়তি ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্স এতে রোগীকে জেলা হাসপাতালে নিতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার স্বজনরা। 

অপর এক রোগীর স্বজন রিপন আলী জানান, একটি দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন তার নিকটতম আত্মীয়। জরুরি ভিত্তিতে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসক। রাতে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় রোগীকে হাসপাতালে নিতে অনেক দেরি হয়। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্যে আত্মীয়কে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। 

রোগীর স্বজন খালেদা আক্তার বলেন, শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় তিন গুণ বেশি টাকা দিয়ে বাইরের অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুন্সের চালক আবদুল হামিদ বলেন, অ্যাম্বুলেন্স থেকে যা আয় হয়, তা চালান আকারে সরকারি কোষাগারে জমা হয়। গাড়ি চালানোর জন্য তেলের দাম বাবদ আলাদা বরাদ্দ দেওয়া হয়। স্থানীয়ভাবে অ্যাম্বুলেন্সের আয় দিয়ে জ্বালানী কেনার অনুমতি না থাকায় এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে। 

তিনি আরও জানান, স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে তেল বাবদ অনেক টাকা বাকি রয়েছে। যার কারণে পেট্রোল পাম্প থেকে এখন আর বাকিতে তেল সরবরাহ করছেন না। 

শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়রা খান জানান, গত ৪ নভেম্বর থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ না পেলে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা সম্ভব হবে না।