সারা বাংলা

বাংলাদেশ প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এ্যাওয়ার্ড পেল আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক

রাঙামাটি পার্বত‌্য জেলার যোগা‌যোগ ও ভৌত অবকাঠা‌মো নির্মা‌ণে সাফল‌্য অর্জন ক‌রে আস‌ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এল‌জিইডি। এরই ধারাবাহিকতায় স্বীকৃ‌তি হিসেবে আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কটি পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টার হতে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ চ‌্যা‌ম্পিয়ন পুরস্কার অর্জন করেছে। এছাড়াও প্রক‌ল্পের ম‌্যা‌নেজার হি‌সে‌বে এল‌জিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ স‌ফি‌কে ম‌্যা‌নেজা‌র হিসেবে চ‌্যা‌ম্পিয়ন পুরস্কার দেওয়া হয়।

গত শ‌নিবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ‌্যমে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর রাঙামাটির আসামব‌স্তি-কাপ্তাই পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কটি বাস্তবায়ন করে। প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট বা পিএমআই একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। যা প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সং‌শ্লিষ্ট প্রকাশনা প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন দিয়ে থাকে। 

প্রজেক্ট ম্যানেজারগণকে সম্মানিত করার কোনো প্ল্যাটফর্ম ছিল না। তারা সবসময় পর্দার পিছনে থেকে যান। এ পুরস্কারের মাধ্যমে প্রকল্প ম্যানেজারদেরকে সম্মানিত করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার গুলশানের ক্রাউন প্লাজায় পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট অন্বেষা আহমেদ এ পুরস্কার তুলে দেন।

সারা বাংলাদেশ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া সরকারি-বেসরকারি ৪৪টি প্রকল্পের মধ্যে মিডিয়াম ক্যাটাগরি প্রকল্পের চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার অর্জন করে প্রকল্পটি। পুরস্কার নেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নূর হোসেন হাওলাদার, রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ স‌ফি, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী যুগল কৃষ্ণ মন্ডল, রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রকৌশলী প্রনব রায় চোধুরী প্রমুখ।

পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভূতি বিষয়ে রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শফি বলেন, আন্তর্জাতিক এ পুরস্কার রাঙামাটির মতো দুর্গম ও দূরবর্তী একটি প্রকল্প নেওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং আমার দলের সকল সদস্যের সহযোগিতায় এই কাজটি সম্পন্ন হতে পেরেছে।

তি‌নি আরও বলেন, এ পুরস্কা‌র প্রা‌প্তি‌তে দা‌য়িত্ব আরও বা‌ড়ি‌য়ে দি‌য়ে‌ছে। এই প্রকল্প পুরস্কার নেওয়ায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে এবং সকলেই রাঙামাটিতে ভ্রমণে উৎসাহী হবেন, এতে করে স্থানীয় জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।

কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কটি এ এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। পর্যটন সম্প্রসারণে ভূমি রাখছে। মোট কথা সড়কটি এ এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

পল্লী অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ এবং হাট বাজার ও গ্রোথ সেন্টার উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করতে এলজিইডি নির্মাণ করে এ সড়কটি। সড়কটি শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় নি। এ এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ সড়কটি রাঙামাটির পর্যটন সম্প্রসারণে রাখছে বড় ভূমিকা। এ সড়ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

২০১৭ সালে অতি বৃষ্টির কারণে ভূমিধসের পর সড়কটি বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্ন হয়। এলজইিডি ও বুয়েটের কারগরি টিম নতুনভাবে ডিজাইন করে ২০২০ সালে সড়কটি মেরামত ও প্রশস্ত করার কাজ আরম্ভ করে। ৩ কোটি টাকা সাশ্রয় করে ৩৯ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হয় নতুন সড়ক ও ৩টি ব্রিজ। করোনায় কাজ বন্ধ হলে নানান প্রতিকূলতার মধ্যে ২০২৩ সালে জুন মাসে কাজ শেষ হয়।

বর্তমান সরকা‌রের পর পর দু’বা‌রের শাসনাম‌লে রাঙামাটি এল‌জিইডির আওতায় পু‌রো জেলায় প্রায় ১৪ শ’ কো‌টি টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবা‌য়িত হ‌য়ে‌ছে।