খেলাধুলা

শান্তর ব্যাখ্যাতীত শটে আউট জয়ের কাছে ‘আনফরচুনেট’

এজাজ পাটেলকে যে তিন ছক্কা মেরেছিলেন তাতে নাজমুল হোসেন শান্তর নিজের ওপর প্রবল বিশ্বাস জন্মেছিল। ক্রিজে থাকলে বড় কিছু করবেন তা বোঝা যাচ্ছিল। সকালে বাঁহাতি স্পিনারের ছোবল দেওয়া এক ডেলিভারিতে জাকির হোসেনের স্টাম্প উপচে পড়ে। 

ক্রিজে গিয়ে শান্ত প্রতি আক্রমণে নিউ জিল্যান্ডকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ৩৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে বড় কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু পরক্ষণে যা করলেন, তা স্রেফ আত্মহত্যা। ব্যাখ্যাতীত এক শটে বিসর্জন দিয়ে আসেন নিজের অতি মূল্যবান উইকেট। আগের দুই টেস্টে তার ব্যাট থেকে আসে দুই সেঞ্চুরি। এবার শান্ত অধিনায়ক।

দায়িত্বও বেশি। শুরুটাও হয়েছিল ভালো। কিন্তু শান্ত ফিরলেন চরম বাজে শটে। পার্ট টাইম স্পিনার গ্লেন ফিলিপসের বল এগিয়ে এসে ওড়াতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন।

শুরুতে বলটার কথাই বর্ণনা করা যাক। অফস্পিনারের বল হাত থেকে ছুটে ফুলটস হয়ে যায়। শান্ত এগিয়ে আসায় তার কোমড় বরাবর বল আসে। শরীরের জোরে বল ওড়াতে চেয়ে শান্ত টাইমিং মেলাতে পারেননি। বল উঠে যায় মিড অফে। সেখানে উইলিয়ামসনের নিখুঁত হাত খুঁজে পায় বল। বোলার এমন সাফল্যে নিজে অবাক। ২২ গজে হতভাগ শান্ত। ক্যাচ নিয়ে উইলিয়ামসন নিজেও বিস্মিত। এ কেমন আউট?

উইকেটের অপরপ্রান্তে ব্যাখ্যাতীত এমন শট দেখেছেন দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করা জয়। তার কাছেও এই শটের কোনো ব্যাখ্যা নেই। অবাক জয় স্রেফ বললেন, ‘আনফরচুনেট।’ দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে জয় বলেছেন, ‘একটু তো হতাশই (আউটের ধরণ)। আউট হয়ে গেছে আনফরচুনেটলি। এটা তো সবদিন হবে না। আমি একটু অবাক হইছি যে ফুলটসে (আউট)…এর আগে অনেকগুলো ভালো শট খেলছিল।’

উইকেটে গিয়ে শান্ত আগ্রাসী মনোভাব দেখান। ডাউন দ্য উইকেটে এসে শট খেলার চেষ্টা চালান অনেকবার। তাতে সফলও হয়েছেন। কিন্তু বাড়তি ঝুঁকি নিতে গিয়েই বিলিয়ে আসেন নিজের উইকেট।। ৩৫ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় শান্তর ৩৭ রানের ইনিংসটি ছিল ১০৫.৭১ স্ট্রাইক রেটে সাজানো। শান্তর ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ নিয়ে জয়ের ব্যাখ্যা, ‘শান্ত ভাই তো সহজাত এমনভাবে ব্যাটিং করে। উনি ওনার পরিকল্পনা অনুযায়ী যেভাবে সহজাত ব্যাটিং করেন সেভাবেই করছেন।’

৫৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ফিলিপস নিউ জিল্যান্ড দলের দিনের সেরা বোলার। অথচ তার প্রথম শিকার ছিল শান্ত। আন্তর্জাতিক টেস্টে প্রথম উইকেট। অফস্পিনারকে হাল্কাভাবে নিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন ব্যাটসম্যানরা তা বোঝা যায় স্পষ্ট। তার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক খেলার পরিকল্পনা বুমেরাং হয়েছে তা জয়ের কথাতেই উঠে এসেছে, ‘ও (ফিলিপস) ওকেশনাল বোলার ছিল। আমরা যদি ওকে চার্জ না করি তাহলে হয়তো দেখা গেল ও যদি ভালো বোলিং করে মূল বোলাররা আমাদের আরও বেশি চেপে ধরবে। আমাদের পরিকল্পনা ছিল যে অকেশনাল বোলারকে (মেরে খেলবে) । আনফরচুনেটলি আমরা বাজে শট খেলে আউট হয়ে গেছি।’

হাতে ১ উইকেট রেখে স্কোরবোর্ডে ৩১০ রান নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন কতদূর যেতে পারে বাংলাদেশ সেটাই দেখার।