ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নে চেতনানাশক খাইয়ে দুইটি বসত ঘরে ডাকাতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে গুরুতর অবস্থায় পরিবার দুটির চার জনকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবি, ডাকাতরা ৬ ভরি স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।
গতকাল সোমবার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার পর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের ওয়ালী ভূঁঞার বাড়ির দুই ঘরে ঘটনাটি ঘটে।
অসুস্থরা হলেন- প্রবাসী মফিজুল হকের একতলা বাসার ভাড়াটিয়া এনজিও কর্মী আরিফুল ইসলাম (৩৫) ও তার স্ত্রী হাবীবা আক্তার (১৯) এবং পাশ্ববর্তী মালিক আমিনুল হকের ঘরের শিল্পী আক্তার (৩৫) ও শিল্পী আক্তারের দেবর জামাল উদ্দিন (৩৮)।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. শহিদুল্লাহ বলেন, চার জন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
এনজিও কর্মী আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রবাসী মফিজুল হকের একতলা বাসায় গত এক বছর ধরে আমরা ভাড়া থাকি। গতকাল রাত ১২টার দিকে আমরা খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাই। এরপর কি হয়েছে কিছুই বলতে পারবো না। সম্ভবত ডাকাতরা আগে থেকেই আমাদের ঘরে প্রবেশ করে এবং খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, সকালে আমাদের একমাত্র সন্তানের কান্নার আওয়াজে আশেপাশে লোকজন ছুটে আসে। প্রতিবেশীদের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ঘরের সব জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। তখনই বুঝলাম কেউ আমাদের ঘর লুট করেছে। পরে স্থানীয়রা আমাকে ও আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করান।
আরিফুল জানান, তার মানি ব্যাগ ও ঘর থেকে ২২ হাজার টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। অন্যকিছু নিয়ে গেছে কিনা এখনও বলতে পারছি না।
আরিফুলের স্ত্রী হাবীবা বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে অল্প সময়ের জন্য বাইরে পানি আনতে গিয়েছিলাম। ধারণা করছি, কেউ না থাকার সুযোগে ঘরে কেউ প্রবেশ করে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক কিছু মিশিয়ে দিয়েছিল।
একই সময় পাশের আমিনুল হকের ঘরেও লুটের ঘটনা ঘটে। এই ঘর থেকে ৬ ভরি স্বর্ণসহ প্রায় ৩০ হাজার টাকা লুট করে নিয়েছে ডাকাতরা।
ভুক্তভোগী শিল্পী আক্তারের ভাসুরের ছেলে সাকিব বলেন, অভিনব কায়দায় পাশাপাশি দুই ঘর লুট করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি ডাকাতরা পরিকল্পিতভাবে দুই ঘরে লুট করেছে। আমার চাচা আমিনুল হকের ঘর থেকে প্রায় ৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ প্রায় ৩০ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমার চাচি শিল্পী আক্তার ও অপর এক চাচা জামাল উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবারের আরও ৫ সদস্য চেতনানাশকে আক্রান্ত হন।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, লুটের ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।