সারা বাংলা

মানিকগঞ্জ পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ 

আজ ১৩ ডিসেম্বর। মানিকগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস।১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের তিন দিন আগে মানিকগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানিকগঞ্জের মাটি থেকে পাক-হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে।

পরের দিন ১৪ ডিসেম্বর সকালে দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল হক চাঁন মিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন পতাকা উত্তোলন করেন।

মুক্তিযোদ্ধারা জানায়, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতেই ঢাকার ক্র্যাক ডাউনের খবর পুলিশ ওয়ারলেসের মাধ্যমে মানিকগঞ্জের নেতারা জানতে পারে। ওই রাতেই ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরীর নেতৃত্বে বিপ্লবী পরিষদ গঠন করা হয়।

বিপ্লবী পরিষদের অন্যতম সদস্য ছিলেন অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম চান মিয়া, মোসলেম উদ্দিন খান হাবু মিয়া, সৈয়দ আনোয়ার আলী চৌধুরী, মফিজুল ইসলাম খান কামাল প্রমুখ।

বিপ্লবী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোররাতে মানিকগঞ্জ ট্রেজারিতে রক্ষিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ বের করে ছাত্র ও জনতার মাঝে বিতরণ করা হয়। পরের দিন থেকে ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরীর আলুর গুদামের পেছনে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং। আগস্ট মাসের দিকে মানিকগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা সংঘটিত হয়ে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নেয়।

এ সময় পাকিস্তান সরকার মেট্রিক পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছিল। পরীক্ষা বানচাল করার উদ্দেশ্যে ক্যাপ্টেন আবদুল হালীম চৌধুরীর নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা ঘিওর সদরে আক্রমণ করে। এ আক্রমণের ফলে ঘিওরে মেট্রিক পরীক্ষা বানচাল হয়ে যায়। এটাই ছিল মানিকগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম অপারেশন।

এরপর থেকে মানিকগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা অসংখ্য যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে। এর মধ্যে গোলাইডাঙা, গাজিন্দা, আজিমনগর, সূতালড়ি, বালিরটেক, বায়রা, নিরালী, মানরার যুদ্ধ অন্যতম। সফলতম গোলাই ডাঙ্গার যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রায় ৮১ জন পাক হানাদার বাহিনী নিহত হয়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের মুখে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাক-বাহিনী পিছু হটতে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় ১৩ ডিসেম্বর বিকেলের পর মানিকগঞ্জ সম্পূর্ণভাবে হানাদার মুক্ত হয়।

মানিকগঞ্জ পাক-হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।