সারা বাংলা

প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে জাটকা, কেউ যেন দেখার নেই

চাঁদপুরের হাইমচরে সবচেয়ে বড় মাছের আড়ৎ চরভৈরবী মাছ ঘাট। সেখানে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে চার ইঞ্চির জাটকা ইলিশ। প্রায় এক মাস ধরে এখানে ডাকের মাধ্যমে জাটকা বিক্রি হচ্ছে। তবে, জাটকা বিক্রি বন্ধে উপজেলা টাস্কফোর্স ও মৎস্য অফিস এখনো কোনো ভূমিকা নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।  

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন জানা যায়, প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত জাটকা বিক্রি হচ্ছে চরভৈরবী মাছ ঘাট আড়তে। নদী থেকে মাছ এনে ডালায় ঢেলে ডাক তোলেন আড়তের সরকার। ব্যবসায়ীরা ডাকের মাধ্যমে মাছ কিনে বরফ দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে বিক্রি করছেন। অনেক সময় এলাকা ঘুরে জাটকা মাছ বিক্রি করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। জাটকা বিক্রি বন্ধে প্রশাসনকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

স্থানীয় জেলে মো. মিলন বেপারী বলেন, বরিশাল ও মহনপুরের জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা মাছ ধরেন। তারা সেই মাছ চরভৈরবী আড়তে বিক্রি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আড়তের সরকার বলেন, গত এক মাস ধরে এখানে ছোট ছোট জাটকা বিক্রি হচ্ছে। ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত মণ মণ জাটকা বিক্রি হয়। প্রশাসনের লোকজন মাঝে মধ্যে এসে ঘুরা দিয়ে চলে যান। জেলেরা মাছ এনে তাদের আড়তে বিক্রি করছেন, আড়তদাররা কমিশন পাচ্ছেন।

জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য মানিক দেওয়ান বলেন, নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ম মাছের আড়ত। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে আড়তে আসতে সর্বোচ্চ ১৫ মনিট সময় লাগে। তাদের নাকের ডগায় জাটকা মাছ বিক্রি হচ্ছে এটা খুবই দুঃখজনক। তারা বেচতে না দিলে তো ওরা (জেলে ও আড়তদার) এভাবে প্রকাশ্যে বিক্রি করতে পারে না। বিভিন্ন সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফোন করে যদি বলি অমক যায়গায় জাটকা বিক্রি হয়, তখন তারা আবার ব্যবসায়ীদের বলে দেয়। এখানে যারা আড়তদার তারা খুবই প্রভাবশালী। এদের ভয়ে অনেক মানুষ কিছু বলে না। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রশিদ বলেন, ওই আড়তে প্রতিদিনই জাটকা মাছ বিক্রি হয় এমন সংবাদ আমাদের কাছে আছে। ইউএনও স্যার এসিল্যান্ড স্যার ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্যারসহ আমরা অভিযানের চিন্তা করছি। 

তিনি আরও বলেন, আমরা গত কয়েকদিন আগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাইকিং করে জাটকা বিক্রি করার সময় তিন জনকে আটক করি। তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট স্যার সাজাও দিয়েছেন। আমরা আশা করি চরভৈরবী থেকেও আমরা বিপুল পরিমাণ মাছসহ তাদের আটক করতে পারবো। সেই লক্ষেই আমরা অভিযানের পরিকল্পনা করছি।

নীলকমল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চরভৈরবী মাছ ঘাটে সকালে জাটকা বিক্রি হয় বিষয়টি ইউএনও স্যারকে বলেছি। তিনি বলেছেন অভিযান চালাবেন। এছাড়া, আমাদের সদস্যরা কুমিল্লায় ট্রেনিংয়ে আছেন। নদীতে অভিযান চালিয়ে জাটকা রক্ষায় আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী অফিসার পুর্বিতা চাকমা বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। খুব দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করবো। ইতোমধ্যে এসিল্যান্ডকে বলে দিয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।