সারা বাংলা

ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের কেলেঙ্কারি: রাজশাহীতে আরও এক মামলা

মোবাইল অ্যাপ ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টে বিনিয়োগের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় রাজশাহীতে আরও একটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় মামলাটি করেছেন ইউসুফ আলী নামের এক ভুক্তভোগী।

মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন- ইউএস এগ্রিমেন্টের রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান মো. ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ (৩৮), বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ফাতেমা তুজ জহুরা ওরফে মিলি (৩২), কান্ট্রি লিডার মোতালেব হোসেন ভুঁইয়া (৩৫), বাংলাদেশ প্রধান সজিব কুমার ভৌমিক (৩৩), কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারুক হোসাইন সুজন (৩৯) এবং রাজশাহী জেলা এজেন্ট মিঠুন মন্ডল (৩৬)। 

আরও পড়ুন: ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের ৫ জনের পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে ইমিগ্রেশনে চিঠি

আসামিদের মধ্যে ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ ও ফাতেমা তুজ জহুরা ওরফে মিলি স্বামী-স্ত্রী। তাদের বাড়ি রাজশাহী নগরীর নওদাপাড়া এলাকায়। কান্ট্রি লিডার মোতালেব লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারুক মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এবং রাজশাহী জেলা এজেন্ট মিঠুন নগরীর বোয়ালিয়াপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। সজিব কুমার ভৌমিকের বাড়ি নোয়াখালী সদরের মাইজদিতে।

এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি মোস্তাক হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় সজিব কুমার ভৌমিক ছাড়া অন্য পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এই পাঁচ আসামি যেন দেশত্যাগ করতে না পারে তার জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরেেক চিঠি দিয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)।

আরও পড়ুন: ‘ইউএস এগ্রিমেন্ট’ অ্যাপ হাতিয়ে নিলো ৩০০ কোটি টাকা

নতুন মামলার বাদী ইউসুফ আলী তার এজাহারে বলেছেন, ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ তাকে এই অ্যাপে বিনিয়োগে উদ্ধুদ্ধ করেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ১৫ মার্চ তিনি তার (ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ) হাতে ৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা তুলে দেন। পরে ২৩ নভেম্বর সোহাগ, তার স্ত্রী ফাতেমা ও মিঠুনের হাতে আরও ১৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা দেন। আসামিরা তাকে আরও বিনিয়োগ করতে উদ্ধুদ্ধ করলে তিনি ১৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেন। সবমিলিয়ে তার বিনিয়োগ ছিল ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

বাদী এজাহারে বলেছেন, আসামিরা তাকে জানান, বিনিয়োগের টাকা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলে নেওয়া যাবে। আর টাকা না তুললে প্রতি লাখের জন্য মাসে মাসে রেমিটেন্স হিসেবে পাওয়া যাবে ১১ হাজার ২০০ টাকা। তিনি মাত্র দুইবার মুনাফা পান। পরে অ্যাপ বন্ধ হয়ে যায়। দেশীয় প্রতারকচক্র এই অ্যাপ বানিয়ে বিনিয়োগের নামে টাকা লুট করে নিয়েছে।

দেশে ‘ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট’ অ্যাপের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে এটি বন্ধ হয়ে যায়। ভুক্তভোগীরা বলছেন, শুধু মোবাইলে অ্যাপ ইনস্টল করে একটা হিসাব খুলে দিয়ে নগদ টাকা নিতেন প্রতারকেরা। এভাবে রাজশাহীর কয়েকশো মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল। সারাদেশে মোট প্রতারিত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

নতুন মামলার বিষয়ে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, ‘ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের প্রতারণার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আমরা মামলার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’