সারা বাংলা

স্কুল বন্ধের মাঝেও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ায় পাবনা জেলার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। সরকারি সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ঈশ্বরদীর সরকারি সাড়া মাড়োয়ারী মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

পাবনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ জেলায় সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জানা গেছে, পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহফুজা সুলতানা।

আরও পড়ুন: বুধবার পাবনার সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা

এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি গণমাধ্যমের কাছে। পাবনা জেলা শিক্ষা অফিসার রোস্তম আলী হেলালী বলেন, পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমার জানা নেই। হয়তো অনুষ্ঠানটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পূর্ব নির্ধারিত ছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে, ঈশ্বরদী উপজেলার সরকারি সাড়া মাড়োয়ারী মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজেও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। তীব্র শীত আর কনকনে বাতাস উপেক্ষা করেই প্রতিষ্ঠানটির ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পাবনা-৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য গালিবুর রহমান শরীফ। 

প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম শাহীনের সভাপতিত্বে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় ও ক্রীড়া পতাকা উত্তোলন করে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য গালিবুর রহমান শরীফ। এ সময় ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাস, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ওহিদুজ্জামান, পৌর মেয়র ইসাহক আলী মালিথা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শৈত্যপ্রবাহের কারণে ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশনা উপেক্ষা করেই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি সাড়া মাড়োয়ারী মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, এমপি সাহেব, ইউএনও, পৌর মেয়রসহ স্থানীয় নেতারা অতিথি থাকায় এই আয়োজন করা হয়। 

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেওয়া আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের অনুমতি নেবো তারা তো আমার এখানে অতিথি ছিলেন। মৌখিকভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি বলা আছে।

এই বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাসের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তীব্র শীতের মধ্যে এইভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসা কনোভাবেই ঠিক হয়নি।

ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, কয়েকদিন আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অধিকাংশ খেলা শেষ করে। আজ ছিল সমাপনী দিন। কিছু খেলা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ সদস্যের সঙ্গে কিছু সমন্বয়ের বিষয় থাকে। আজ অনুষ্ঠান শুরু করা হয়েছে সকাল সাড়ে ১০টার পর। তখন রোদ ছিল। এটা সমস্যা নয় বলে মনে করি।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক নাজমুল হক বলেন, আজ সকাল ৯টার দিকে পাবনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল মঙ্গলবার এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বর্তমানে পাবনার ওপর দিয়ে মৃদুশৈতপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পাবনায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক গত তিনদিন পাবনার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ ঘোষনা করা হয়। পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা ও জেলা শিক্ষা অফিসার রোস্তম আলী হেলালী স্বাক্ষরিত পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যালয় বন্ধের এই নির্দেশনা জারি করা হয়।