সারা বাংলা

ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় উপচেপড়া ভিড়

রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে চলছে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ছুটির দিন হওয়ায় শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল থেকেই মেলায় ভিড় করেছেন হাজারো ক্রেতা-দশনার্থী। মেলার সপ্তম দিনে এসে প্রচুর সংখ্যক ক্রেতার সমাগম হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।

আজ ‍দুপুর ১২টার পর থেকে দলে দলে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের আগমনে জমে ওঠে বাণিজ্যমেলা। গত ২১ জানুয়ারি মেলা উদ্বোধনের পরে থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা তেমন বেশি না থাকলেও গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার দর্শনার্থী ও ক্রেতার সমাগম ছিল ভালো। এদিকে, এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কে যানজটের কারণে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা। যানজট পুরোপুরি নিরসন না হলে মেলায় আসা ক্রেতাদের সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। 

এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইবিপি) সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসরে ৩৩১টি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বছর দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৩০টি। যার মধ্যে ছোট বড় মিলিয়ে প্যাভিলিয়ন রয়েছে মোট ১৮টি। ভারত, পাকিস্তান, হংক, তুরস্কসহ ১২টি দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা মেলায় অংশ নিচ্ছেন। বাণিজ্য মেলার প্রধান ফটক করা হয়েছে মেট্রোরেলের আদলে। মেলার আয়তনও বাড়ানো হয়েছে অনেকটা। বাণিজ্য মেলার এবারের আসর সফল করতে ইপিবি কঠোরভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মেলায় প্রবেশ টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। শিশুদের জন্য টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ২৫ টাকা। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রবেশ ফ্রি। নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে মেলার প্রতিটি অংশে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার দুপুরের পর থেকে মেলায় বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ও ক্রেতা আসতে থাকেন। মেলার স্টলগুলোতে লাল, নীল, হলুদ, সবুজ বাতির রঙ্গিন আভায় জাঁকজমক পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশি পণ্যের বিশ্বস্ত নাম ওয়ালটনের স্টলে ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। মেলার স্টলগুলোর কর্মচারীরা সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে নিজেদের পণ্য সম্পর্কে জানিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।

সরকারি ছুটির দিন হওয়ার কারণে মেলা প্রাঙ্গণ ছিল দর্শনার্থীতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। দর্শনার্থীদের অনেককেই শীতের কাপড়, গৃহস্থালীর পণ্য ও ইলেকট্রনিক্স আইটেমগুলোর দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে। এছাড়া, মেলায় প্রথমবার শিশুপার্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুপার্কটিতে ফ্লিপার, নাগরদোলা, নৌকা, ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইড রয়েছে। যেখানে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিভিন্ন রাইডে উঠিয়ে আনন্দ দিচ্ছেন। তবে শিশুপার্কের রাইডের টিকিটের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি বলে অভিযোগ করেন দর্শনার্থীরা।

ফার্নিচার ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, আমরা গত ৬ দিনে কোনো ফার্নিচার বিক্রি করতে পারিনি। আমরা ছুটির দিনের অপেক্ষা ছিলাম এতোদিন। অবশেষে আমাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। জমতে শুরু করেছে মেলা। সকাল থেকে টেবিল, চেয়ার, খাটসহ কয়েকটি ফার্নিচার বিক্রি করেছি।

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে মেলায় আশা দর্শনার্থী শান্তা ইসলাম বলেন, আমি প্রতি বছর অপেক্ষায় থাকি বাণিজ্য মেলায় আসার জন্য। এবারও এসেছি। বিভিন্ন কসমেটিকস জাতীয় পণ্য কিনেছি। ওয়ালটনের একটি স্মার্ট টেলিভিশন খুব ভালো লেগেছে। আশা করছি, হাজবেন্ডকে সঙ্গে নিয়ে কিনে নেবো। 

তিনি আরও বলেন, মেলায় আসতে গিয়ে বাইপাস সড়কে যানজটে পড়তে হয়েছে। ১০ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে ১ ঘণ্টা লেগেছে। বাড়ি ফেরার পথে কতক্ষণ রাস্তায় বসে থাকতে হয় জানা নেই। তবে, সব মিলিয়ে এবারের বাণিজ্য মেলায় ভালোই লেগেছে।