দেহঘড়ি

যেভাবে রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারেন

শরীরের সুস্থতা-অসুস্থতা অনেকাংশে নির্ভর করে রক্তচাপের ওপর। রক্তচাপ ঠিক থাকলে শরীরে সব  অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করে। রক্তচাপের সরাসরি প্রভাব আছে হৃদয়ের সঙ্গে। রক্তচাপ বেশি হলেও সমস্যা আবার কম হলেও সমস্যা। রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সঠিক ডায়েট করা প্রয়োজন। এর  পাশাপাশি এটি সময়মতো পরীক্ষা করাও প্রয়োজন।    বিশেষজ্ঞরা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ এখন আর বয়সের উপর নির্ভর করে না। খুব অল্প বয়সেই উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। লাইফস্টাইল ডিজিজ এখন হাই ব্লাড প্রেশার। অনিয়মিত জীবনধারণ, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, মূলত এই কারণে খুব অল্প বয়স থেকেই এখন উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।

কীসে মাপবেন রক্তচাপ: এমনি তো ‘ট্র্যাডিশনাল’ যন্ত্র রয়েছেই। তবে হালে নানা ধরনের অ্যাপের আবির্ভাব হয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে রক্তচাপ সহজেই মাপা যায়। এসব অ্যাপের কিছু কিছু তো আবার সরাসরি মনিটর থেকে রিডিং নিয়ে নেয়। ফলে লিখে রাখার সমস্যায়ও পড়তে হয় না।  হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, হোম ব্লাড প্রেশার মনিটরিং এমনিতে লাভজনক এবং উপযোগী অভ্যাস হলেও ঘন ঘন তা করা কোনোভাবেই ঠিক নয়। এতে লাভের বদলে ক্ষতি বেশি হবে। আতঙ্ক বাড়বে, অসুস্থতা বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া এমনিতেও কোনো কিছুর ‘অতি’ ভালো নয়। সেটুকু মনে রাখলেই ব্যস!

প্রথম ধাপ: রোগী চেয়ারে পেছনে হেলান দিয়ে বসবেন। এরপর দুই হাত টেবিলের উপর থাকবে। রোগীর হাত এমনভাবে রাখতে হবে যেন হার্টের সমতলে থাকে। হাফ হাতা অথবা ঢিলা জামা পরা ভালো। জামার হাতা ভাজ করে উঠিয়ে রাখার সময় যেন টাইট হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। তারপর রক্তচাপ মাপার কাপ কনুই থেকে ২.৫ সে.মি উপরে বাঁধুন। খুব ঢিলা অথবা টাইট করে বাঁধা যাবে না। স্থূল ব্যক্তি ও বাচ্চাদের কাফের সাইজ ভিন্ন হয়।

দ্বিতীয় ধাপ: কনুইয়ের উপরে হাত দিয়ে ব্রাকিয়াল ধমনির অবস্থান নির্ণয় করে স্টেথোস্কোপের ডায়াফ্রাম বসিয়ে নিন। ডায়াফ্রাম কাপড়ের উপরে রাখলে ডায়াফ্রাম ও কাপড়ের ঘর্ষণে শব্দ শুনতে অসুবিধা হয়।

তৃতীয় ধাপ:  মিটার স্কেলটি হার্টের সমতলে রাখতে হবে।

চতুর্থ ধাপ: অনেক সময় দেখা যায় প্রেশার মাপতে গিয়ে প্রকৃত সিস্টোলিক প্রেশার এবং শব্দ শুনতে পাওয়ার মাঝে একটা গ্যাপ তৈরি হয়। এটাই অসকালটেটরি গ্যাপ। এটা এড়ানোর জন্য সব প্রথমে পালপেটরি মেথডে সিস্টোলিক প্রেশার দেখতে হবে।

কীভাবে দেখবেন: রেডিয়াল ধমনির উপরে হাত রেখে ব্লাডার পাম্পার দিয়ে পাম্প করে কাফ ফোলাতে হবে। যতক্ষন না পালস বন্ধ হয়। কবজির ২ সে.মি নিচে বৃদ্ধা আঙুলের সাইডে আমরা তিন আঙুলে সাহায্যে রেডিয়াল পালস অনুভব করি। রেডিয়াল পালস আর কিছুই না আমরা সচারচর হাতে যে পালস দেখে থাকি তাই। যেখানে বন্ধ হবে সেটাই সিস্টোলিক।

এরপর আরও ৩০মি.মি উপরে মিটার উঠাতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে চাপ কমাতে হবে এবং ব্রাকিয়াল ধমনীতে রক্ত চলাচল করার কারণে সৃষ্ট শব্দ শুনতে হবে । শব্দ যেখানে শুরু হয় সেটা সিস্টোলিক প্রেশার এবং যেখানে শব্দ শেষ হবে তাকে ডায়াস্টলিক প্রেশার বলে।

সূত্র: টাইমস অব ইণ্ডিয়া