সারা বাংলা

ডুমুরিয়ার সেই চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ আহমেদ এবং তার চাচাতো ভাই স্থানীয় রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং ১০-১৫ জনকে আসামি করে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার (৬ মার্চ) ভুক্তভোগীর খালাতো ভাই গোলাম রসুল বাদী হয়ে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটি করেন। 

এজাহারভুক্ত অন্য পাঁচ আসামিরা হলেন- গাজী আব্দুল হক, আলামীন গাজী, আক্তারুল আলম সুমন, সাদ্দম গাজী ও মো. ইমরান হোসেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন: খুলনায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ আহমেদ শাহপুর বাজারে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক নারীকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার পর ওই দিন রাতেই ভুক্তভোগী খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাদী গোলাম রসুল খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির সামনে যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন ওসিসি কর্তৃপক্ষ উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ ও তার চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভিকটিমকে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

ভিকটিম ও তার মা ওসিসি থেকে বের হওয়া মাত্র ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে এজাহারভুক্ত আসামিরাসহ নাম না জানা আরো ১০/১৫ জন ভুক্তভোগী ও তার মাকে টেনে-হিচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে অপরহণ করে নিয়ে যান। এ সময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মোটরসাইকেলসহ গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে গভীর রাতে নাম না জানা ২-৩ জন আসামি ভিকটিম ও তার মা ফতেমা বেগমকে খুন-জখম করার ভীতি হুমকি দিয়ে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে ভিকটিমকে দিয়ে পুলিশের কাছে মিথ্যা বক্তব্য প্রদানে বাধ্য করেন। পুলিশকে ম্যানেজ করে গাজী তৌহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তারা। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ ও তার চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদ ভিকটিমকে ডুমুরিয়া থানা এলাকার অজ্ঞাত একটি স্থানে আটক রাখেন। 

আরও পড়ুন: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিলো দুর্বৃত্তরা

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, বাদী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি। পক্ষান্তরে আসামিরা অত্যন্ত অর্থ ও পেশী শক্তির অধিকারী, নারী নির্যাতনকারী, অবৈধ ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারকারী, আইন অমান্যকারী। তারা ভিকটিমকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিল। তারপরও বাদী, ভিকটিমকে উদ্ধার করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে, ট্রাইব্যুনালে এসে মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়। মামলায় আরো বলা হয়, উক্ত দিন ছাড়াও ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ের প্রভোলনে এর আগেও একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে।