খেলাধুলা

থুসারায় এলোমেলো বাংলাদেশের সিরিজ হার

শুরুটা নাজমুল হোসেন শান্তকে দিয়ে। এরপর তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। হ্যাটট্রিক পূরণ নুয়ান থুসারার। ‘লাসিথ মালিঙ্গার’ বোলিং অ্যাকশন থুসারার। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে তাকে খেলায়নি শ্রীলঙ্কা।

আজ সুযোগ পেয়েই বাজিমাত ডানহাতি পেসারের। শান্ত ও তাওহীদকে বোল্ডের পর মাহমুদউল্লাহকে এলবিডব্লিউ করে হ্যাটট্রিক পূরণ। শ্রীলঙ্কার পঞ্চম এবং লাসিথ মালিঙ্গার পর বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কান হিসেবে হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব তার। হ্যাটট্রিকের পর তার শিকার হন সৌম্য সরকার ও শরিফুল ইসলাম। ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফারে উজ্জ্বল ডানহাতি পেসার। তাতেই এলোমেলো বাংলাদেশ।

আউট অব বক্স থেকে থুসারা একাদশে ঢুকে সিরিজ নির্ধারণে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে স্রেফ উড়িয়ে দেন। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশ ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি। থুসারা চতুর্থ শ্রীলঙ্কান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে সিরিজ জয়ের স্বাদ দিয়েছেন ২-১ ব্যবধানে।

ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডের চিত্রটা ১৪৬ হলেও শুরুটা ছিল বিব্রতকর। জাকের আলী যখন আউট হন তখন স্কোরবোর্ডে রান ৬ উইকেটে ৩২! এর আগে বাংলাদেশ এতো কম রানে কখনো এতো উইকেট হারায়নি। থুসারার আক্রমণে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দিশেহারা। উত্তর দেওয়ার মতো কিছুই ছিল না। সেখানে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে রিশাদ হোসেন দেখান কারিশমা। ২৬ বলে তুলে নেন ফিফটি।

যেখানে ৭ ছক্কা হাঁকিয়ে মাঠ মাতিয়ে রাখেন। দুই স্পিনার হাসারাঙ্গা ও থিকসানাকে ৬ ছক্কা হাঁকানোর পর বিনুরা ফার্নান্দোকে মিড উইকেট দিয়ে উড়ান গ্যালারিতে। তাতে ফিফটি পেয়ে যান সহজেই। কিন্তু একা দলকে বেশিদূর টানতে পারেননি। জয়ের থেকে ৫৮ রান দূরে থাকতে রিশাদ ৫৩ রানে ফেরেন ড্রেসিংরুমে। জয়ের আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল আগেই। রিশাদের ইনিংস কেবল কিছুটা মান বাঁচিয়েছে। নয়তো নিজেদের সর্বনিম্ন ৭০ রানে অলআউটের লজ্জা পেতে হতো। লিটন  (৭), শান্ত (১), সৌম্য (১১), তাওহীদ (০), মাহমুদউল্লাহ (০), জাকের (৪) ও মাহেদী (১৯) দ্রুত আউট হন।

নাজমুল হোসেন শান্ত টানা তৃতীয় ম্যাচে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। শ্রীলঙ্কার ইনিংস একাই টেনেছেন কুশল মেন্ডিস। ডানহাতি ওপেনার ৫৫ বলে করেন সর্বোচ্চ ৮৬ রান। ১৫৬.৩৬ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংসে ছিল ৬টি করে চার ও ছক্কা। ইনিংসের শুরুতে থিতু হতে সময় নিয়েছিলেন কুশল। বল দেখে শুনে খেলে রান করেছেন। থিতু হওয়ার পর অনায়েসে উইকেটের চারিপাশে আক্রমণ চালিয়েছেন। শর্ট বল পুল করে ছক্কা উড়িয়েছেন। স্পিনার ও পেসারকে মাথার ওপর দিয়ে মেরেছেন ছক্কা। স্কয়ার কাটেও পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছক্কা পেয়েছেন।

৩৫ বলে পেয়েছিলেন ফিফটি। এরপর দ্রুত এগিয়ে রান তুলেছেন। সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল তার। ১৭তম ওভারে তার ইনিংসটি থামান পেসার তাসকিন। ডানহাতি পেসারের শর্ট বল উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দেন। মেন্ডিস বাদে কেউ বিশের ঘর পেরোতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন দাসুন শানাকা। ৯ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৯ রান করে ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন শানাকা। এছাড়া অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ১৫, কামিন্দু মেন্ডিস ১২ ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ১০ রান করেন।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন সবচেয়ে ব্যয়বহুল। ৪ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট। ওভারপ্রতি ১১.৭৫ রান দেওয়ার পথে ৩টি করে চার ও ছক্কা হজম করেছেন। ২ উইকেট নিয়ে দলের সেরা তাসকিন। রান দিয়েছেন ২৫। এছাড়া রিশাদ ৩৫ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন।

শ্রীলঙ্কা প্রথম ম্যাচে ৩ রানে জয়ের পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় ৮ উইকেটের জয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি জয়ের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেষ ম্যাচে খুব বাজেভাবে হেরে অপেক্ষা হারল বাংলাদেশের।  দুই দল সামনেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে এবং দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে।