জাতীয়

পায়রায় প্রথম কনটেইনার টার্মিনাল হবে পিপিপিতে

দুই ধাপে পায়রা বন্দরের প্রথম কন্টেইনার টার্মিনাল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে লক্ষ্যে ‘ডেভেলপমেন্ট অব কন্টেইনার টার্মিনাল-১ অব পায়রা পোর্ট আন্ডার পিপিপি মডেল’ শীর্ষক প্রথম প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রাথমিক উদ্যোগ নেওয়া। প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৬টি বার্থ নির্মাণ করা হবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে (ডেভেলপমেন্ট অব কন্টেইনার টার্মিনাল-২ অব পায়রা পোর্ট) ১ হাজার ৯০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৮টি বার্থ নির্মাণ করা হবে। পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে ২০ লাখ টিইইউ কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করা সম্ভব হবে, যা দেশের আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পিপিপির আওতায় প্রকল্পটি প্রণয়নের আগে একজন ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগ দিয়ে পুরো প্রকল্পটির একটি এসেসমেন্ট করা হবে।

মন্ত্রণালয় জানায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ চ্যানেলে অবস্থিত পায়রা বন্দরটি দেশের তৃতীয় বৃহৎ সমূদ্রবন্দর। এটি বর্তমান সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক-এর আওতাভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার প্রকল্প। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দেশে বন্দরের ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় গত ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পায়রা বন্দর উদ্বোধন করা হয়।

সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়ালিংফোর্ড কর্তৃক সম্পাদিত প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাইয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে পায়রা বন্দর প্রকল্পের সার্বিক কর্মকাণ্ডকে ১৯টি কম্পোনেন্টে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ-২ প্রকল্পটি অন্যতম।

সূত্র জানায়, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি সামগ্রিকভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রকল্পের বাস্তবতা বিবেচনায় পিপিপি এবং জি-টু-জি দুই ধরনের পদ্ধতির মধ্যে সুবিধাজনক যেকোনো পদ্ধতি অনুসরণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য গত ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পায়রা বন্দর উন্নয়ন সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভায় প্রকল্পের ১২টি কম্পোনেন্ট পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এবং অবশিষ্ট ৭টি কম্পোনেন্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সংস্থা কর্তৃক জিওবি/জি-টু-জি/এফডিআই/পিপিপি মডেলে কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সূত্র জানায়, এফডিআই/পিপিপি মডেলে পায়রা বন্দরের কম্পোনেন্টগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে পিপিপি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে পায়রা পোর্ট কন্টেইনার টার্মিনাল-১ এবং পায়রা পোর্ট কন্টেইনার টার্মিনাল-২ শীর্ষক দুটি কম্পোনেন্ট পৃথকভাবে পিপিপি প্রকল্পের তালিকায় অন্তর্ভুক্তিকরণের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি চিঠি পিপিপি কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পিপিপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ‘ডেভেলপমেন্ট অব কন্টেইনার টার্মিনাল-১ অব পায়রা পোর্ট আন্ডার পিপিপি মডেল’ শীর্ষক প্রকল্পের যোগ্যতা যাচাই-বাছাই সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্ক্রিনিং সভায় প্রকল্পটি পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রজেক্ট স্ক্রিনিং-এর জন্য মেন্ডেটরি ক্রাইটারিয়া অনুযায়ী উত্তীর্ণ হয়।