চেন্নাই সুপার কিংসের অ্যাওয়ে ম্যাচের মিশন সাকসেসফুল। তবে চেন্নাইয়ের জয়ের রাতে বিবর্ণ বাংলাদেশের তারকা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে রান প্রসবা উইকেটে ৪ ওভারে ৫৫ রান দিয়েছেন। অতি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ১ উইকেট নিয়ে অবশ্য দলের জয়ে অবদান রেখেছেন ঠিকই। সঙ্গে সীমানায় দুর্দান্ত ক্যাচ তো রয়েছেই।
চেন্নাইয়ের জয়ের রাতে বিফলে গেছে মুম্বাইয়ের ওপেনার রোহিত শর্মার সেঞ্চুরি। রান উৎসবের ম্যাচে রোহিত ৬৩ বলে ১০৫ রান করেন ১১ চার ও ৫ ছক্কায়। তাতেও দলকে জেতাতে পারেননি।
ওয়াংখেড়ে মুম্বাইয়ের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে চেন্নাই ৪ উইকেটে ২০৬ রান করে। জবাবে ৬ উইকেটে ১৮৬ রানের বেশি করতে পারেনি মুম্বাই। ২০ রানে জয় পায় শিরোপাধারীরা।
চেন্নাইয়ের এবারের আসরের প্রথম অ্যাওয়ে জয়ের নায়ক পেসার মাথিশা পাথিরানা। ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কান পেসার একাই গড়ে দিয়েছেন ব্যবধান। সঙ্গে অসাধারণ ইমপ্যাক্টফুল ইনিংস খেলেছেন চেন্নাইয়ের ধ্রুবতারা মাহেন্দ্র সিং ধোনি। শেষ ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৪ বল মোকাবিলা করেন। প্রথম ৩ বলেই হার্দিক পান্ডিয়াকে হাঁকান ৩ ছক্কা। শেষ বলে নেন ২ রান। তার ঝড়ো ২০ রানের ইনিংসই ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে বলার অপেক্ষা রাখে না।
এদিন চেন্নাইয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন রিতুরাজ গায়কোয়াড়। ৪০ বলে ৫টি করে চার ও ছক্কায় ইনিংসটি সাজান। এছাড়া শিবাম দুবে ৩৮ বলে করেন ৬৬ রান। ১০ চার ও ২ ছক্কা ছিল তার ইনিংসে।
লক্ষ্য তাড়ায় রোহিত ও ইশান ৭০ রানের জুটি গড়েন। সেখানে ইশান ছিলেন অনেকটাই দর্শক হয়ে। ১৫ বলে করেন মাত্র ২৩ রান। মোস্তাফিজ দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন। বোলিংয়ের শুরুটা ভালো ছিল। পাওয়ার প্লে’তে ৬.৮৩ ইকোনমিতে বল করা বাঁহাতি পেসার প্রথম বলে ৪ হজম করার পরও ৮ রানের বেশি দেননি। তবে পঞ্চম ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা হজম করায় কিছুটা এলোমেলো হয়ে যায় তার প্রথম স্পেল। ২ ওভারে তার বোলিংয়ে আসে ২৩ রান।
১৭তম ওভারে তাকে আবারও বোলিংয়ে ফেরান গায়কোয়াড়। ওই সময়ে মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৪ বলে ৭২ রান। লক্ষ্য অনেকটাই কঠিন মুম্বাইয়ের জন্য। কিন্তু এই রানও টি-টোয়েন্টিতে অহরহ হয়ে যায়। মোস্তাফিজের তৃতীয় ওভারের শুরুটাও ভালো হয়নি। প্রথম দুই বলেই দুই ছক্কা। মাঝে একটি ওয়াইড। তাতে ১৩ রান চলে আসে।
টিম ডেভিড তার দুই লেন্থ বল উড়ান লং অন দিয়ে। তৃতীয় বলে মোস্তাফিজ নেন প্রতিশোধ। এবার তার কাটার উড়াতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ তোলেন। সীমানায় সেখানে রাচীন রাবিন্দ্র ক্যাচ নেন। মোস্তাফিজ পেয়ে যান এবারের আইপিএলে তার দশম উইকেট। ওভারের শেষ তিন বলে এক বাউন্ডারিসহ বাঁহাতি পেসার দেন ৬ রান। ৩ ওভারে ৪২ রানে মোস্তাফিজ তখন খুব ব্যয়বহুল।
অপরপ্রান্তের বোলাররা চাপে রাখায় অধিনায়ক মোস্তাফিজকে নিয়ে ঝুঁকি নেওয়ার সাহস পাচ্ছিলেন। তাতে কাজও হয়েছে। ১৯তম ওভারে নিজের শেষ ওভার করতে আসেন তখন মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১২ বলে ৪৭ রান।
ওই ওভারটা ছিল ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মোস্তাফিজ যত কম রান দিতে পারবেন ততই লাভ। বাঁহাতি পেসার এবার দলকে হতাশ করেননি। ওভারের শেষ বলে রোহিত ছক্কা উড়ালেও বাকি পাঁচ বলে সিঙ্গেলের বেশি হয়নি। সঙ্গে ছিল ২ ওয়াইড। তাতেও ১৩ রানের বেশি দেননি তিনি। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে তার বোলিং স্পেল ছিল এরকম, ৪-০-৫৫-১।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৩৪ রান দরকার ছিল মুম্বাইয়ের। পাথিরানার করা ওভারে দুই চার হাঁকিয়ে রোহিত সেঞ্চুরি করলেও দলকে জেতাতে পারেননি। ২০ রানের হারে বিফলে যায় তার তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল নাম্বার।
এর আগে চেন্নাই ঘরের বাইরে দুই ম্যাচ হেরেছিল। সব মিলিয়ে ছয় ম্যাচে তাদের জয় চারটি। মুম্বাইয়ের ছয় ম্যাচে এটি চতুর্থ হার।