সাতসতেরো

সবুরে ‘দিলবাহার আজওয়া শরবত’ মেলে

কথায় আছে, সবুরে মেওয়া ফলে। মেওয়া ফলে কিনা জানিনা। তবে শরবত মেলে। গরমে মানুষের তৃষ্ণা বাড়ে। এই সময় শরবত বা পানীয়ের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। এই গরমে এক গ্লাস শরবত পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধৈর্য ধরা বড় কঠিন! তারপরেও মানুষ অপেক্ষা করে, লাইনে দাঁড়ায় এক গ্লাস  শরবত পাওয়ার জন্য। বলা হচ্ছে পুরান ঢাকার দিলবাহার আজওয়া শরবতের কথা। 

পুরান ঢাকার আলুবাজার রোডের লুৎফর রহমান লেনে দেখা মিলবে দিলবাহার আজওয়া শরবত। যে শরবত বিক্রি শুরু হয় রাত ১১ টার পর। সমস্ত নগরী যখন নীরব হয় তখনো মানুষের কলরবে মুখরিত থাকে এই জায়গাটি। ঢাকার নানা প্রান্ত থেকে এই শরবত খেতে আসেন ভোজনরসিকেরা। দিলবাহার শরবতের বিক্রেতা সুমন দোসাই। থরে থরে সাজিয়ে রাখেন শরবতের সব উপকরণ। তারপর ক্রেতাদের সামনে প্রস্তুত করেন এই বিশেষ শরবত। অনেক ক্রেতা এই শরবত কিনে বাসায়ও নিয়ে যান। সুমন দোসাইয়ের সহকারি এই পার্সেলগুলো সরবরাহের দায়িত্ব পালন করেন।

আলুবাজারের গলি দিয়ে এগিয়ে গেলে সামনে যে চা-পানের দোকান রয়েছে, সেখানেই পাওয়া যায় শরবত খাওয়ার জন্য টোকেন। সুমনের এই শরবতে ঘন দুধের সঙ্গে মালাই ও বিভিন্ন ধরনের বাদাম মিশ্রণ করা হয়, সঙ্গে দেওয়া জাফরান ও সিক্রেট নানা উপকরণ। এছাড়াও যোগ করা হয় কর্নফ্লাওয়ার, চকলেট, ওটস, ডুমুরসহ বাহারি উপাদান।

সুমনের এই দিলবাহার আজওয়া শরবত খেতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে সংগ্রহ করতে টোকেন। সেই টোকেনের সিরিয়াল অনুযায়ী মিলবে কাঙিক্ষত শরবত। যার সিরিয়াল যত আগে সে তত আগে পাবেন এই শরবত। ভিড় এড়াতে অনেকেই আগের দিন টোকেন সংগ্রহ করে রাখেন এবং পরের দিন আসেন শরবত খেতে।

মিরপুর থেকে শরবত খেতে আসা হাসান বলেন, মিরপুর থেকে বাইকে এসেছিলাম ওয়াইফসহ। ঘণ্টাখানেক ধরে দাঁড়িয়ে আছি। 

শরবত খেতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রনি বলেন, আমার কাছে ভালোই লেগেছে। উপকরণ হিসেবে দাম ঠিক আছে। এক্সপেএক্সটেশন আরো বেশি ছিলো। যারা অনেক মিষ্টি খেতে পছন্দ করের তাদের কাছে এই শরবত বেশি ভালো লাগবে।

সুমন বলেন, আমার শরবত বেশ ভালো বিক্রি হয় আলহামদুলিল্লাহ। দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই খেতে আসেন৷ বেশিরভাগ লোকই বেশ প্রশংসা করেন। চাহিদা এত বেশি থাকে যে সবাইকে দিতেও পারি না।

পুরান ঢাকায় বিখ্যাত এই দিলবাহার আজওয়া শরবতের দাম রাখা হয় ১০০ টাকা। পার্সেলের জন্য অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হয় না। সুমনের এই শরবত খেতে চাইলে অবশ্যই সময় নিয়ে আসতে হবে অথবা টোকেন সংগ্রহ করতে হবে আগের দিন, নইলে অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘ সময়।