সারা বাংলা

গফরগাঁওয়ে রাজিব হত্যা: আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার চেয়ে বিক্ষোভ

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ী রাজিব মিয়া (৩২) হত্যার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়নি। মূল অভিযুক্তদের নাম বাদ দিয়ে মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় মামলায় অভিযুক্তদের নাম অন্তর্ভূক্তি, জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে গফরগাঁও-হোসেনপুর সড়কের উপজেলার নলচিড়া পালের বাজারে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এ সময় রাজিব হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িতদের মামলায় এজাহারভুক্তকরণ এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

উপজেলার পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ ইউনিয়নের চর শাখচূড়া গ্রামের মো. আমিন মিয়ার ছেলে রাজিব ঢাকায় সবজির ব্যবসা করতেন। গত ১৯ এপ্রিল রাজিবসহ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে চাচাত ভাই মাইদুল ইসলাম রিপন, দুলাল মিয়া ও তাদের লোকজন। বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা আটকে দেওয়ার প্রতিবাদ করায় রাজিবকে মারধর করা হয়। তাকে গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২০ এপ্রিল রাতে মারা যান। মারামারির ঘটনার পর ২০ এপ্রিল বিকেলে রাজিবের বড় ভাই মো. সোহেল বাদী হয়ে পাগলা থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিন জনকে আসামি করা হয়। প্রথমে মারামারির মামলা হলেও পরে সেটিতে হত্যা মামলার ধারাযুক্ত হয়। কিন্তু ঘটনার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার বাদী সোহেল মিয়া বলেন, ভাই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকাকালে পুলিশ তড়িঘড়ি করে তাদের মতো করে মামলা নেয়। সেখানে সব আসামিদের নামও দেয়নি।

তপ্ত রোদে মানববন্ধনে ছেলে হত্যার বিচার চান রাজিবের বাবা আমিন মিয়া। তিনি আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘আমার ছেরাডারে বাইরাইয়া, পাড়ায় মাইর‌্যালছে হেরা। হেরা অহনও ধরা পড়ে না। আমি হেরার ফাঁসি চাই।’

রাজিব তিন বছর বয়সী রাইসা বেগম ও আটমাস বয়সী জিনাস মিয়া দুই সন্তানের জনক ছিলেন। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী জেসমনি আক্তার স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বিনা অপরাধে আমার স্বামীরে মারছে। আমার দুই সন্তানের কী অইবো। আমার সব কাইর‌্যা নিল ওরা। আমি ওদের ফাঁসি চাই।’

এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে অভিযুক্তরা। তাদের বাড়িও তালাবদ্ধ।

পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. খায়রুল বাশার বলেন, ‘বাড়ির রাস্তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আসামিদের ধরতে চেষ্টা চলমান রয়েছে। আমাদের গাফিলতি নেই। মামলা বাদীই দিয়েছেন, এখানে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। তদন্তে আরও কেউ বের হলে তার নামযুক্ত করা হবে, সে যেই হোক।’