ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংক পাবনার কাশিনাথপুর শাখার তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের পর সেখানে নতুন দুই জন কর্মকর্তা যোগদান করেছেন। তারা হলেন, ব্যাংকটির পাবনার আব্দুল হামিদ রোড শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুস সবুর শেখ ও আতাইকুলা শাখার ক্যাশ অফিসার সোহেল রানা। তারা রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় যোগ দেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী সার্কেলের পরিদর্শক দল কাশিনাথপুর শাখা পরিদর্শনে গিয়ে ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা খোয়া যাওয়ার তথ্য পায়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অভিযোগে শাখা ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আলোচিত এই ঘটনার দুই দিন ছুটির পর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার (২৮ এপ্রিল) ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে দেখা গেছে। তবে গ্রাহকদের অনেকে টাকা লোপাটের ঘটনা জানতে পেরে ব্যাংকে খোঁজ খবর নিতে যান। তারা নিজেদের একাউন্ট চেক করে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে এ ঘটনায় ব্যাংকের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ার মতো ঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
নতুন শাখা ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আব্দুস সবুর শেখ বলেন, ‘ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি শাখা ব্যবস্থাপক ও ক্যাশ অফিসার হিসেবে সোহেল রানা যোগদান করেছেন। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। লেনদেন স্বাভাবিক আছে। গ্রাহকদের কোনো টাকা মিসিং হয়নি। ভল্ট থেকে মিসিং হয়েছে।’ কাউকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ব্যাংকের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে আসা অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী সার্কেলের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এজাহারুল হক বলেন, ‘আসলে একটা ঘটনা তো ঘটেছে। যার কারণে ব্যাংকের সুনাম কিছুটা হলেও ক্ষুন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। এতে গ্রাহকদের আতঙ্কিত হওয়াটা স্বাভাবিক। বিভিন্ন রকম গ্রাহক ব্যাংকে এসে খোঁজখবর নিচ্ছেন, তাদের অ্যাকাউন্ড চেক করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আসলে টাকাটা কীভাবে, কোথায় গেল তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। কেন্দ্রীয় অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এটি তদন্ত করছে। তদেন্তর পর পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এর বেশি কিছু আসলে খোলাসা করে আমি বলতে পারছি না। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করছি, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরের পর আটক তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করার পর বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তাকে তাদের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।