খেলাধুলা

জ্যোতির ফিফটির পরও বড় হার

ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটা একদমই ভালো হলো না বাংলাদেশের। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বড় হার সঙ্গী করেছে স্বাগতিকরা। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ফিফটির পরও বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ৪৪ রানে।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত ৭ উইকেটে ১৪৫ রান করে। বোলাররা লক্ষ্য নাগালে রাখলেও ব্যাটসম্যানরা পারেননি নিজেদের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করতে। জ্যোতির ৫১ রানের সুবাদে বাংলাদেশের রান কোনোমতে ১০১- এ গিয়ে পৌঁছায়।

উইকেট ছিল দারুণ। টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ। বল ভালোই ব্যাটে আসছিল। রান করার জন্য ছিল আদর্শ কন্ডিশন। চিরাচরিত উচুঁনিচু বাউন্স নয়, সমান বাউন্সেই বল এসেছিল। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানই পারেননি টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং করতে।

দিনের সেরা ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের অধিনায়ক জ্যোতি। একমাত্র ফিফটি এসেছে তার ব্যাট থেকেই। শেষ ওভারে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫১ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তবে দিন শেষে শেষ হাসিটা হেসেছে অতিথিরা।

ভারতের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি। উদ্বোধনী জুটিতে আসে কেবল ১৮ রান। নতুন বলে ফারিহা তৃষ্ণা বোল্ড করে ড্রেসিংরুমে ফেরান তারকা ব্যাটসম্যান স্মৃতি মান্দানাকে। ৯ বলে ২ চারে ৯ রানে থেমে যায় তার ইনিংস। 

সেখান থেকে ৪৩ রানের জুটি গড়েন শেফালি ভার্মা ও ইয়াশতিকা ভাটিয়া। দুজন সিঙ্গেল ও ডাবলসে রানের চাকা সচল রাখে। সুযোগ পেয়ে তুলে নেন বাউন্ডারি। শেফালি ২২ বলে ৩১ ও ইয়াশতিকা ২৯ বলে ৩৬ রান করেন।

লেগ স্পিনার রাবেয়া খাতুন এই দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান। কিন্তু বেশিক্ষণ সেই স্বস্তি টেকেনি। ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর ব্যাটিংয়ে এসে হিসেব পাল্টে দেন। ২২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩০ রান করেন মারকুটে ব্যাটসম্যান। ফাহিমা খাতুন ১৪তম ওভারে তাকে এলবিডব্লিউ করে থামান।

তখন মনে হচ্ছিল ভারতকে অল্পরানে আটকে রাখা যাবে। কিন্তু শেষ দিকে রিচা ঘোষের ১৭ বলে ২৩ ও সাজিভান সাঞ্জানার ১১ বলে ১১ রানের ইনিংসে ভারত লড়াই করার জন্য যথেষ্ট পুঁজি পেয়ে যায়।

বল হাতে বাংলাদেশের সেরা ছিলেন রাবেয়া খান। ৪ ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন। ২ উইকেট পেয়েছেন পেসার মারুফা। প্রথম ওভারে ৯ রান দিলেও পরের ২ ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন তৃষ্ণা ও ফাহিমা।

লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই দিলারা আক্তার আউট হন ৪ রানে। এরপর ৩০ রানে যেতেই নেই আরও ৩ ব্যাটসম্যান। শুরুর ছন্দপতন জ্যোতি ও স্বর্ণা আক্তারের ব্যাটে প্রতিরোধ পেলেও ধীর গতিতে ব্যাটিং করেন তারা। তাতে জয়ের পথ থেকে ছিটকে যেতে থাকে বাংলাদেশ। সিঙ্গেলে রান পেলেও বাউন্ডারি এসেছে কালেভাদ্রে। তাতে আসকিং রেট বেড়ে যায় তরতড়িয়ে। ইনিংসের অর্ধেকতম ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৪৭। শেষ ১০ ওভারে দরকার ছিল ৯৯ রান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে।

জ্যোতি একপ্রান্ত আগলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি। তবে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করতে পারেননি তিনিও। জ্যোতি বাদে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দুই অঙ্কের ঘর পেরিয়েছেন কেবল মুর্শিদা খাতুন (১৩) ও স্বর্ণা আক্তার (১১)।

লড়াকু পুঁজি নিয়ে ভারত বড় জয় তুলে মাঠ ছেড়েছে। অতিথিদের বোলারদের মধ্যে রেনুকা সিং ১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন সেরা। ২টি উইকেট নেন পুজা ভাস্টাগর।

দারুণ জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। ৩০ এপ্রিল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।