সারা বাংলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় বাঁধ নির্মাণে ধীরগতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পদ্মা নদীর তীর রক্ষায় বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে ধীরগতিতে। নির্দিষ্ট সময়ের একবছর অতিবাহিত হলেও প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ৬২ শতাংশ। সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নদী ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন পদ্মা তীরবর্তী বাসিন্দারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করতে দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পদ্মা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ৩ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ডিসেম্বরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ৫৬৬ কোটি টাকা। সংশোধনের পর প্রকল্পটির ব্যয় ৩৭ কোটি বেড়ে দাঁড়ায় ৬০৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুনে। পরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এই প্রকল্পের অধীনে ২৯টি প্যাকেজে ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার নতুন নদী তীর সংরক্ষণ, চারটি প্যাকেজে আগের বাস্তবায়ন হওয়া ৪ কিলোমিটার জুড়ে পুনর্বাসনসহ আগে নির্মাণ করা ৮ কিলোমিটার পুনরাকৃতিকরণ কাজ চলছে। 

পদ্মার তীরবর্তী বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছরই নদী ভাঙন হয়। ভিটামাটিসহ বিঘার পর বিঘা আবাদি জমি বিলীন হয় আগ্রাসী পদ্মায়। বছরের পর বছর বসবাসের স্থান পরিবর্তন করেও ভোগান্তির শেষ হয় না। তাদের দাবি, দ্রুত সময়ে মধ্যে বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ করা। 

আব্দুল হাকিম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বছরের প্রায় অর্ধেক সময় নদী ভাঙন আতঙ্কে পার করি। যখনই বর্ষাকাল আসে তখনই মানুষের মনে আতঙ্ক বেড়ে যায় বহুগুণে। গত কয়েক বছর ধরে বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু, নির্মাণকাজ শেষই হচ্ছে না। আমরা চাই, এই বাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ হোক। নির্মাণ কাজ শেষ হলে আমাদের অনেক উপকার হবে। 

আমজাদ আলী নামের অপর বাসিন্দা বলেন, বাঁধ নির্মাণ করা হলে চরবাগডাঙা ও শাজাহানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা নদী ভাঙন আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাবেন। কিন্তু, কাজ চলছে অনেক ধীরগতিতে। এই বাঁধকে ঘিরে আমাদের অনেক আশা। কিন্তু কাজে অনেক গাফেলতি হচ্ছে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, চরবাগডাঙ্গা ও শাহজাহানপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্পের এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৬২ শতাংশ। বর্ধিত মেয়াদের সময় শেষ হবে চলতি বছরের জুনে। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হবে। 

তিনি আরও বলেন, বাকি কাজ সম্পন্ন করতে আরও সময়ের প্রয়োজন। সেজন্য ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা সময় বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে।

বাঁধ নির্মাণকাজের মান নিয়ে কোনো ফাঁকিবাজি যাতে না হয় এ জন্য প্রকৌশলীরা নিয়মিত তদারকি করছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ বলেন, পদ্মাপাড়ের বাসিন্দাদের ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেগা প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার।  কাজটি দ্রুত শেষ করতে অনুরোধ করা হবে। যাতে কম সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করে করে পদ্মাপাড়ের বাসিন্দাদের রক্ষা করা যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।