রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা দ্রুত নিরসনে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া।
গাম্বিয়ার বানজুলে ২-৩ মে অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা সংক্ষেপে ওআইসির ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্র্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে। উক্ত সভার সাইডলাইনে ৩ মে গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাউদা জাওলা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
শুক্রবার (৩ মে) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল মিয়ানমার হতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। একইসাথে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা পরিচালনার জন্য অর্থ সাহায্য দিতে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সৌজন্য সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর রক্ষণাবেক্ষণে বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রতিবন্ধকতাসমূহ তুলে ধরেন। রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করার প্রতিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন।
এ প্রেক্ষিতে গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বর্তমান অবস্থা সরোজমিনে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার অভিযোগ প্রমাণে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে একই সাথে তিনি এ মামলা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত ফান্ডের বিষয়টিও তুলে ধরেন। একইসাথে ওআইসিতে গাম্বিয়ার সভাপতিত্ব থাকাকালীন সদস্য রাষ্ট্রসমূহের নিকট হতে আরও সহযোগিতা প্রাপ্তির বিষয়ে গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ প্রেক্ষিতে ড. হাছান মাহমুদ এ মামলা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় আইনি সাহায্য ও সাক্ষ্য প্রমাণ প্রদানের আশ্বাস ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২৯ মে অনুষ্ঠিত ওআইসির চতুর্দশ শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভার সাইডলাইনে গাম্বিয়ার নেতৃত্বে রোহিঙ্গা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের এডহক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় International Court of Justice (ICJ)- এ মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গাম্বিয়ার নেতৃত্বে মামলা করার বিষয়ে ঐক্যমত্য আসে এবং মামলার উদ্যোগ গ্রহণ করাসহ অন্যান্য আইনি ও আর্থিক সহযোগিতার ব্যাপারে ওআইসি সদস্য দেশগুলো হতে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে International Court of Justice (ICJ)- এ গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করে।