কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় গণহারে গ্রেপ্তার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির ১৪ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি)।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ব্লক রেইড ও চিরুনি অভিযান চালিয়ে নিরীহ মানুষজনকে আটক করে হয়রানি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ গ্রেপ্তার বাণিজ্যের শিকার হচ্ছে। তাই, তথ্য-প্রমাণ ও সুনির্দিষ্ট আসামি ছাড়া গণহারে গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে হবে। হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
যারা বিবৃতি দিয়েছেন, তারা হলেন—সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সরোয়ার মিলন, রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, জিয়াউল হক মৃধা, নুরুল ইসলাম মিলন, ইয়াহিয়া চৌধুরী, আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস, আবুল কাশেম সরকার, এম এ গোফরান, ইঞ্জিনিয়ার মামুনুর রশীদ এবং মোক্তার হোসেন।
সাবেক সংসদ সদস্যরা বিবৃতিতে বলেন, শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক যৌক্তিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করতে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন এবং নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে। আমরা এই দমন-পীড়ন এবং হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।
তারা বলেন, শুরুতেই আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করা সম্ভব থাকলেও কেন প্রলম্বিত করে এই আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া হলো, কারা এর জন্য দায়ী, তা তদন্ত করে বের করে জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে।
সাবেক সংসদ সদস্যরা বলেন, আন্দোলন দমনের নামে ব্লক রেইড দিয়ে, চিরুনি অভিযান চালিয়ে গণহারে গ্রেপ্তার এবং গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালানো বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এই আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছে, তাদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে খুলে দিয়ে দেশে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
রুস্তম আলী ফরাজী জাপার কো- চেয়ারম্যান, এম এ গোফরান প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্ত এবং গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাবেক সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এ গোফরানকে প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে মনোনীত করেছেন। সাবেক সংসদ সদস্য এম এ গোফরান এর আগে পার্টির উপদেষ্টা পদে দায়িত্ব পালন করেন। এ আদেশ ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে বলে দলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।