খুলনার কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজার বাসভবনে ঢুকে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে বাড়িটিতে অগ্নিসংযোগ করেন তারা। এতে পুড়ে যায় মৃতদেহটি।
গতকাল সোমবার রাতে কয়রা সদরের বাসভবন থেকে মোহসিন রেজার পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা। জি এম মোহসিন রেজা কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
নিহত মোহসিন রেজার চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার বিকেল ৪টার দিকে আমরা খবর পাই মোহসিন ভাইকে মেরে তার বাসায় আগুন দেওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ লোকজন থাকায় আমরা যেতে পারিনি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসভবন থেকে তার লাশ কয়রার গোবিন্দপুর গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে আনা হয়। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে দাফন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন সন্ধ্যায় মোহসিন ভাইয়ের কয়রা উপজেলা সদরের বাড়িতে পৌঁছাই, তখন দেখি ভেতরে আগুন জ্বলছে। ঘরের বারান্দা আগুনের তাপে গরম হয়ে আছে। সেখানেই পড়ে আছে চেয়ারম্যানের আগুনে পোড়া মরদেহ। কোনো রকমে পানি দিয়ে আগুনের তাপ কমিয়ে মরদেহ বের করে এনেছি। দোতলা বাসভবনের অনেকাংশ পুড়ে গেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়রায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসে উল্লাস করতে শুরু করেন। বিকেল ৩টার দিকে মিছিল থেকে ভাঙচুর চালানো হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়। আগুন দেওয়া হয় খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামানের বাসভবনে।
পরে কয়রা সদরে অবস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজার বাসায় বিক্ষুব্ধ লোকজন হামলা করতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে বাসার ভেতর থেকে গুলি করা হয়। এসময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন আরও সংগঠিত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজার বাসায় হামলা চালায়। তারা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা সেখানেই জি এম মোহসিনকে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে তারা বাড়িটিতে অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় আগুনে পুড়ে যায় মোহসিন রেজার মৃতদেহ।
কয়রা থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বাইরের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান মারা গেছেন কিনা জানি না। আমরা থানার ভেতরে আছি। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত এর বাইরে যাওয়া যাবে না।’