আনোয়ার হোসেন শাহীন, মাগুরা : বিচিত্র দেশীয় ফলের মধ্যে ‘ডেউয়া’ অন্যতম একটি। অপ্রধান হলেও এই ফলটি সবার পরিচিত। টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি আমাদের দেশের অনেকের কাছেই খুব পছন্দের।
নির্বিচারে বৃক্ষনিধন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে ডেউয়াসহ বাহারি নানা জাতের দেশি ফল।
ডেউয়া ফলটি গোলাকৃতির, ২-৫ ইঞ্চি চওড়া হয়, পাকলে হলুদ রং ধারণ করে। প্রতিটি ফলের মধ্যে ২০-৩০টি বীজ থাকে। বীজের গায়ের মাংসল অংশটাই খাওয়া হয়। প্রতিটি ফল ২০০-৩৫০ গ্রাম হতে পারে।
ডেউয়া গাছ ১০-১৫ মিটার লম্বা হয়। ফল সুস্বাদু এবং উপকারী। ফল কাঁঠালের ন্যায় যৌগিক বা গুচ্ছফল। বহিরাবরণ অসমান। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে বহিরাবরণ হলুদ। ভেতরের শাঁস লালচে হলুদ। ফলের ভেতরে থাকে কাঁঠালের ছোট কোয়ার (কোষের) মতো কোয়া এবং তার প্রতিটির মধ্যে একটি করে বীজ থাকে।
সাধারণত মার্চ মাসে ফুল আসে এবং আগস্ট মাসের দিকে ফল পাকতে শুরু করে। গাছ রোপণের উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল।
ডেউয়া ফল শহুরে লোকদের কাছে তেমন পরিচিত নয়। মাঝেমধ্যে গাঁয়ের লোকেরা শহরে আনলেও কেনার লোক কম। কারণ বেশির ভাগ লোক এ ফলটি চেনেন না। গ্রামেও এ ফলের চাষ হয় না। বন-বাদাড়ে অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে ওঠে এই গাছ।
ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়ামের আধার বলা হয় ডেউয়া ফলকে। এগুলো ছাড়াও ডেউয়া ফলে রয়েছে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।
ডেউয়া ফল মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। যকৃতের নানা অসুখ নিরাময়ে সাহায্য করে ডেউয়া। কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের কারণে পেটব্যথা কমাতেও সহায়তা করে। ডেউয়াতে বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্ত চলাচলে সহায়তা করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ডেউয়া ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, প্রধান ফলের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে অপ্রধান নানা জাতের ফল। অপ্রধান ফল লাভজনক না হওয়ায় মানুষ আগ্রহ হারাচ্ছে এসব ফলের আবাদে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জুলাই ২০১৪/ টিপু/এএ