ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) চিকিৎসকরা টানা তিন সপ্তাহ খেয়ে-না-খেয়ে আন্দোলনে আহত রোগীদের সেবা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন। এ কাজ করতে গিয়ে তারা আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের হামলাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এনডিএফ নেতারা। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যখাতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিয়োগ বাতিল করার দাবি জানায় এনডিএফ।
ডা. মাহমুদ হোসেন বলেন, তারপরও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা, জরুরি অপারেশন ও পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসনে আর্থিক ফান্ড গঠনসহ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হয়েছে, যা এখনো চলমান।
সংগঠনটির বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের দোসররা এখনও রাজত্ব করে চলছে। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের তুলনায় এখানে কোনো পরিবর্তন দৃশ্যমান নয়। স্বৈরাচারের দোসর দুই সচিব, সচিবালয়ের অন্যান্য কিছু কর্মকর্তা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রত্যক্ষ বিরোধিতাকারী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা তাদের পদে বহাল থেকে এখনও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্র-জনতার আশা, আকাঙক্ষা ও আন্দোলনের ফসল এ অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া না হলে তারা যে কোনো সময় স্বাস্থ্যখাত অস্থিতিশীল করে তুলবে।
তারা আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর চিকিৎসকরা এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিএসএমএমইউসহ সব স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে স্বপদে বহাল রয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে কোনো বিশৃঙ্খলা যেন সৃষ্টি না হয় এবং যে কোনো ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রের মুখেও চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, গণ-অভ্যুত্থানে পর অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আওয়ামী সরকারের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যখাত পুনর্গঠন এবং দুর্নীতিবাজ চিকিৎসকদের অপসারণ এবং তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন এবং সৎ, যোগ্য, পরিশ্রমী ও বঞ্চিত চিকিৎসকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল, হাসপাতালের পরিচালক এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ পূরণ করে একটি আস্থাশীল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। কিন্তু আমরা গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস হয়ে গেলেও তার কোনো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না।
শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণকারী, দুর্নীতিবাজ ও ছাত্র-জনতার চিকিৎসায় বাধা প্রদানকারী স্বৈরাচারের দোসর চিকিৎসকদের পদায়ন করার মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলেও এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন।