আন্তর্জাতিক

ওড়িশায় আটক বাংলাদেশি মৎসজীবীদের মুক্তির বিনিময়ে ভারতীয় মৎজীবীদের মুক্তির দাবি

ভারতের ওড়িশা রাজ্যের পারাদ্বীপে আটক থাকা ৭৮ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে দেশে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে ইতিমধ্যেই কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে দুই দেশ। 

এদিকে এবার, বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের শর্তহীন দেশে ফেরা আটকাতে প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে ওড়িশা সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদক সমিতি। তিন দপ্তরেই চিঠি দিয়ে বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের দেশে ফেরা নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক আলোচনার গোটা প্রক্রিয়ারই বিরোধিতা করেছে ওড়িশার মৎস্যজীবীদের সর্ববৃহৎ এই সংগঠন। 

মৎস্যজীবী এই সংগঠনের দাবি, বিনা শর্তে বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের মুক্তি নয়। বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের পরিবর্তে ফেরত দিতে হবে বাংলাদেশের জেলে আটক থাকা ওড়িশার ৩১ জন মৎস্যজীবীকে।

ওড়িশা সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদক সংঘের সভাপতি শ্রীকান্ত পরিডা একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশি দুটি ট্রলার ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করে বেআইনভাবে মাছ মারার সময় কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে তাদের আটক করে পারাদ্বীপে আনা হয়। ট্রলার দুটিতে ১৬০ মেট্রিক টনের বেশি মাছ ছিল। এটিকে নিলাম করার জন্য সরকারিভাবে বলা হলেও এখন মাছসহ আটক ৭৮ জন বাংলাদেশিকে স্বদেশ ফেরানোর জন্য সরকার চেষ্টা করছে। ওড়িশা সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদক সমিতি এর বিরোধিতা করছে। আমাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে অবগত করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “গত ১৪ অক্টোবর ভারতীয় ৩১ মৎস্যজীবী সমুদ্রের মধ্যে মাছ ধরার সময় ভুলবশত বাংলাদেশ জলসীমায় প্রবেশ করে। এর ফলে বাংলাদেশ সরকার তাদের গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি ৩০ টন মাছ বাজেয়াপ্ত করে। আজ অবধি বাংলাদেশ সরকার তাদের মুক্তি দেয়নি। যদি বাংলাদেশ সরকার তাদের ৭৮ জন মৎস্যজীবীকে নিজ দেশে নিতে চায়, তাহলে প্রথমে বাংলাদেশে আটক থাকা ৩১ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে মুক্তি দিন।”

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও ইঙ্গিতপূর্ণভাবে সপ্তাহখানেক আগে বিধানসভায় বাংলাদেশে আটক থাকা পশ্চিমবঙ্গের ৭৯ জন মৎস্যজীবীর মুক্তির ব্যাপারে বিধানসভার অভ্যন্তরে সরব হয়েছিলেন। 

ভারতীয় কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে সর্বশেষ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, গত বুধবার কোস্টগার্ডের নিয়মিত নজরদারির সময় আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইনের (আইএমবিএল) কাছ থেকে এফভি লায়লা-২ ও এফভি মেঘনা-৫ নামের দুটি ট্রলারসহ বাংলাদেশি জেলেদের আটক করা হয়। ওই জাহাজে থাকা মোট ৭৮ জন ক্রু সদস্যকে ওড়িশার পারাদ্বীপে নিয়ে আসার পর তাদের আলাদা আলাদাভাবে ভারতীয় কোস্টগার্ড, ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং সিআইএফ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। গোটা ঘটনা নিয়ে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত আছে, খুব শিগগির এটি নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যদি তাদের হস্তান্তরের নির্দেশ আসে তাহলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আইন মেনে তাদের হস্তান্তর করা হবে।