রাজপথে নেমেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। তাদের দাবি একটাই: পে-স্কেলের দশম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি। এই দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা।
‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি দিয়ে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। হাজার হাজার শিক্ষককে সেখানে দেখা যায়। বিশেষ করে ঢাকা ও আশপাশের জেলার শিক্ষকরাই সমাবেশ ভরে তোলেন।
সমাবেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তাদের বক্তব্যে সরকারের কাছে একই দাবি রাখেন। তারা চান পে-স্কেলের দশম গ্রেডে উন্নীতি করা হোক তাদের চাকরি।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগ দেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনিও তার বক্তব্যে প্রাথমিকের শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান রাখেন।
স্লোগানে স্লোগানে শহীদ মিনার এলাকা মুখর করে তোলেন শিক্ষকরা। তাদের বলতে শোনা যায়, একটাই দাবি, দশম গ্রেড চাই।
তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারী হিসেবে জাতি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাথমিকের শিক্ষকদের ওপর। এই পরিহাস থেকে তারা পরিত্রাণ চান। মিছিলের স্লোগানে উঠে আসে সেই দাবির কথা।
এই দাবি নিয়ে রমনায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনার দিকে যাওয়ার পথে শিক্ষকদের শাহবাগে আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হচ্ছে তাদের।
শিক্ষার গুণগত মান ঠিক করার জন্য আগে পরিমাণগত দিকটি ঠিক করার পক্ষে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কেন আন্দোলন হয় না; সেই বিষয়েও মানুষকে সজাগ করার কাজটি করে যাচ্ছেন তিনি।
বিভিন্ন সময় দেওয়া বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ প্রশ্ন রেখেছেন, “আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কত বেতন পান? যারা ১১ গ্রেড, ১২ গ্রেড, ১৩ গ্রেডে চাকরি করেন, তাদের বেতন ১১ হাজার, ১২ হাজর, ১৩ হাজার; এই রকম। সেই বেতন দিয়ে তাদের কাছ থেকে আমরা যে বেতন আশা করব, সেটি খুব উন্নত মানের হতে পারে না।”
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে অধ্যাক সলিমুল্লাহ সরকারি কলেজে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে কেন প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য তেমন কিছু হচ্ছে না; তা নিয়ে আক্ষেপ করেন।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকের শিক্ষকদের জন্য আপনারা আন্দোলন করছেন না কেন?”
প্রাথমিক শিক্ষকরা কয়েক বছর ধরে বেতন বৈষম্য দূরীকরণ ও দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের জন্য আন্দোলন করে আসছে। ২০২৪ সালজুড়ে ঢাকায় অনেক কর্মসূচি দিয়েছে সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ছিল তেমন একটি কর্মসূচি। সেদিনই তারা দাবি পূরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল হাকিমের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।