দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেছেন, “সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমরা যেসব বড় বড় দুর্নীতির কথা বলি, এই দুর্নীতির একটি বড় অংশ হচ্ছে ক্রয়ে। আমরা যদি ক্রয় পদ্ধতি সম্বন্ধে সচেতন থাকি, বাজারমূল্য সম্বন্ধে সচেতন থাকি, আমরা যে জিনিসটা ক্রয় করছি সেটি আমাদের দরকার কিনা এ সম্বন্ধে সচেতন থাকি, তাহলে দুর্নীতি অনেকাংশে লাঘব করা সম্ভব।”
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজে দুদক কর্মকর্তাদের সরকারি ক্রয়নীতির ওপর ১৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, “সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায় অসংখ্য দুর্নীতির খবর আপনারা পেয়েছেন। কোথাও অস্বাভাবিক বেশি দামে মালামাল কেনা হয়েছে, কোথাও নিম্নমানের মালামাল কেনা হয়েছে, যা এখন ব্যবহার করা যায় না। এসব ব্যাপারে দুদক কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।”
হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, “কতগুলি দুর্নীতির বিষয়ে আপনার অবহিত। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, মেডিকেল সেক্টর। কিছুকাল আগেও ঠিকাদার ঠিক করতো হাসপাতালের জন্য কি কি যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। হাসপাতালে বাধ্য করা হতো, সেসব যন্ত্রপাতি কেনার পেপারে সই করতে। সেগুলো ঢাকায় আসতো এবং সেই সমস্ত মালামাল হাসপাতালে সাপ্লাই করা হতো। দেখা যেত, ওই সব অধিকাংশ মালামাল দিয়ে অপারেশন করা যাচ্ছে না।”
দুর্নীতি করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তবে, আমাদের চেষ্টা থাকবে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর।”
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি) আক্তার হোসেন বলেন, “দুর্নীতি বন্ধের পাশাপাশি আমাদের সবচেয়ে বেশি নজর রাখতে হবে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম রিজু।
সরকারি ক্রয়নীতির ওপর ১৫ দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে দুদকের সহকারী পরিচালক এবং উপ-সহকারী পরিচালক মিলিয়ে ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করছেন।