হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ‘বীর নিবাস’ পাওয়া ৫৫ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ৩৯ জনই বিত্তবান। অথচ একাত্তরের অনেক মুক্তিযোদ্ধা এখনও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এখানে তাদের উদ্দেশ্যে সরকারের দেওয়া বীর নিবাসে বসবাসের সুবিধা ভোগ করছেন সম্পদশালীরা।
এ অনিয়মের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখায় একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদ বিন কাশেম।
অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি করে বিত্তবানদের বীর নিবাস বরাদ্দ দেওয়ার ঘটনায় উপজেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প’।
প্রতিবেদ থেকে জানা যায়, প্রকল্পের দুইটি পর্যায়ে মাধবপুর উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫৯টি বীর নিবাস বরাদ্দ হয়। পরে ৫৫টি নির্মাণ হলেও ভূমি জটিলতার কারণে চারটি নির্মাণ করা যায়নি। নির্মিত ৫৫টি বাড়ির মধ্যে ৩৯টি বাড়ি স্বচ্ছল ও বাকি ১৬টি অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা পেয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প বাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এনাম খাঁসহ আওয়ামী লীগের পরিচয়ধারী প্রভাবশালীরা ৩৯টি বীর নিবাস দখলে নিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে বাড়ি বরাদ্দ দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিন জানান, বীর নিবাস বরাদ্দ দেওয়ার জন্য টাকা লেনদেন হয়েছে। অনেক অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বীর নিবাস পাননি। যারা পেয়েছেন তাদের বেশিরভাগ স্বচ্ছল ও বিত্তবান। কয়েকজনের বাড়ি-গাড়িও রয়েছে।
অপর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. মিয়াব আলী বলেন, “অনেক অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আছেন- যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। কষ্টেসৃষ্টে জীবন যাপন করছেন। তাদের বীর নিবাস দেওয়া হয়নি। বিত্তবানদের সরকারি বাড়ি দেওয়া হয়েছে স্বজনপ্রীতি ও টাকা লেনদেনের মাধ্যমে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাশেম বলেন, “আমরা তদন্ত করে যা পেয়েছি, তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে তার আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”