শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও চলমান গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে মধুর ক্যান্টিনের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের দেওয়া বিবৃতিকে ফ্যাসিবাদী আচরণে বহিঃপ্রকাশ বলেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এ বিবৃতি দেওয়াকে রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সৌন্দর্য। দীর্ঘ ১৬ বছর যা ছিল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। নানা চেতনার বাটখারা দিয়ে বিরোধী দলকে খারিজ করে দেওয়ার যে সংস্কৃতি তা আজো শেষ হয়নি। কতিপয় সংগঠন সেই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করছে।
তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্র্যাকডাউন শুরু করে। এর নেপথ্যে ছিল জেনারেল টিক্কা খান এবং পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ ইসলামবিদ্বেষী জুলফিকার আলী ভুট্টো। হাসিনার ট্রাইব্যুনাল যখন শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে হত্যা করে তখন পাকিস্তানের আরেক রাজনীতিবিদ ইমরান খান পাকিস্তান পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করলে মূলধারার দলগুলির মধ্যে একমাত্র ভুট্টোর দল নিন্দা প্রস্তাবের বিরোধিতা করে।
তারা আরো বলেন, ২০১৩ সালের ২৫ আগস্ট প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির জনসভায় বিএনপির মহাসচিব ফখরুল পাকিস্তান আর্মির অপকর্মের দায় দেশবাসীর ওপর চাপানোর তীব্র প্রতিবাদ জানান। এ ছাড়াও হাসিনা আমলে একাধিকবার বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান টিক্কা-ভুট্টো চক্রের দায় এ দেশের মানুষের ওপর চাপানোর বিরোধিতা করে মজলুম বিএনপি-জামায়াতের রাজবন্দিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
শিবিরের এ দুই নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আজো বাংলাদেশের মাটিতে টিক্কা-ভুট্টোর দালালরা সক্রিয়। ইসলামবিদ্বেষী টিক্কা-ভুট্টো চক্র তাদের পাপের বোঝা এ দেশের গণমানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়ে টিক্কা-ভুট্টো চক্রের দায়মুক্তি নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। ১৯৭৭ সালে জন্ম নেওয়া ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকে ধারণ করেই তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের এ বিবৃতি তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এখানে ডাকসু নির্বাচন ও গঠনতন্ত্র সংস্কার প্রস্তাবনা শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন করে। সে সময় ছাত্র সংগঠনগুলো থেকে কোনো ধরনের বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি।
আজ তাদের বিবৃতি প্রমাণ করে যে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), সিলেটের এমসি কলেজ, টঙ্গির তামিরুল মিল্লাতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অপকর্মের দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপাতে ব্যর্থ হয়ে তারা নতুন ইস্যু তৈরি করে অপরাজনীতি করার চেষ্টা করছে। সুতরাং ছাত্রশিবির সম্পর্কে মিথ্যাচার করে বিবৃতি প্রদান করা সংগঠনগুলো তাদের নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও ফ্যাসিবাদী আচরণের পরিচয় দিয়েছে।