২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে সংঘর্ষে পুলিশের ভূমিকা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক এডিসি শাহেন শাহের রিমান্ড শুনানিতে এ মন্তব্য করেন।
মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ শাহেন শাহের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। শাহের শাহের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘‘তখন তিনি অ্যাডমিন হিসেবে কাজ করেন। আর একজন অ্যাডমিনের কাজ কে কোথায় ডিউটি করবে, এটা তদারকি করা। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সঠিক না। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি।’’
রাষ্ট্রপক্ষের ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘‘২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ডিবির হারুন ও শাহেন শাহ রমনার দায়িত্বে ছিলেন। বিএনপির এই আন্দোলন বানচালের জন্য পরিকল্পনা করেন তারা। পরবর্তীতে তাদের সহায়তায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি যেদিন সমাবেশ ডাকতো সেদিন আওয়ামী লীগও সব সময় একটা সমাবেশ ডাকতো। আর তার নাম দিত শান্তি সমাবেশ। কিন্তু তাদের হাতে থাকতো অস্ত্র, লাঠি, সোটা। আর এতে হারুন, শাহেন শাহের নির্দেশে সহায়তা করতো পুলিশ বাহিনী। সেদিনের সমাবেশে আমিও উপস্থিত ছিলাম। জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালানো হয়। সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করে। গাজায় আজ যেমন পরিস্থিতি, সেখানেও ওই রকম পরিস্থিতি হয়েছিল। ভীতিকর অবস্থা। কী অবস্থা বর্ণনা করা যায় না। আমরা মামলা করতে যাই। হাসিনার নির্দেশে মামলা নেওয়া হয়নি। সেখানে জাহাঙ্গীর গুলি করছে আর পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা সাহায্য করেছে।’’
শাহেন শাহের আইনজীবী বলেন, ‘‘এজাহারে তার কথা কোথাও উল্লেখ নেই। তিনি এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না।’’
এ সময় আদালত বলেন, ‘‘আপনাদের পিটিশনে আছে উনি তখন ডিবি পুলিশের দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, আমরা সেটা টিভিতে দেখেছি।’’ পরে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডে আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়। শাহেন শাহ এ মামলার ৪৯ নম্বর আসামি।