খেলাধুলা

মার্তিনেজদের কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে পিএসজি

লুইস এনরিকে ২০২৩ সালে পিএসজির কোচের দায়িত্ব নেন। স্প্যানিশ কোচের কাছে ফরাসি ক্লাবটির একটায় দাবি ছিল, চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা এনে দেওয়া। সেই লক্ষ্যে ভালোই এগুচ্ছে এনরিকের শিষ্যরা।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরে যায় পিএসজি। তবে ঘরের মাঠ প্রিন্স দে পার্কে ৩-১ গোলের সুবিধা নিয়ে ৫-৪ গোলের অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ফরাসি জায়ান্টরা। ম্যাচ হারার পরও কোচ এনরিকে তাঁর দলকে বিশ্বের সেরা স্কোয়াড বলে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।

ম্যাচটি ৫-৫ সমতায় গড়াতে পারতো। এমনকি ভিলার জয়ও সম্ভব ছিল যদি পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক অবিশ্বাস্য সেভ না করতেন। ম্যাচ শেষে এনরিকে বলেন, “আমি মনে করি আমার বিশ্বের সেরা স্কোয়াড রয়েছে, শুধু গোলরক্ষক নয়। পিএসজির মতো ক্লাবে আপনি অনেক মানসম্পন্ন খেলোয়াড় পাবেন। দুই লেগ মিলিয়ে আমরা জয়ের যোগ্য ছিলাম। আমি খুব খুশি, কারণ আমি সমর্থকদের আরেকটি সেমিফাইনাল উপহার দিতে পারছি।”

এনরিকে ভিলার খেলার মান এবং দ্বিতীয়ার্ধে তাদের দারুণ গতির সম্পর্কে বলেন, “আমরা দুর্দান্তভাবে ম্যাচ শুরু করেছিলাম, দুটি অসাধারণ গোল করেছিলাম এবং ফাঁকা জায়গাগুলো কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম। আমরা ভুলে যেতে পারি না যে, এটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, এবং প্রতিপক্ষ দলও অনেক গুণমানসম্পন্ন। ভিলা দ্বিতীয়ার্ধে অনেক তীব্রতার সঙ্গে খেলেছে। তাদের হারানোর কিছুই দেখেনি, কারণ তারা প্রথম লেগ হেরে গিয়েছিল এবং এই ম্যাচেও প্রথমার্ধে পিছিয়ে ছিল।”

পিএসজি এখনও চ্যাম্পিয়ন লিগ শিরোপা জিততে পারেনি। তারা টানা দ্বিতীয়বার সেমিফাইনালে ওঠল, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষে আর্সেনাল ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্য জয়ী দল। কাতারের মালিকানায় যাওয়ার পর ফরাসি ক্লাবটি এই প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ ফাইনাল খেলেছে। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ২০২০ সালে সেই ফাইনালে হারে তারা।

পিএসজি তাদের আগের ‘গ্যালাক্টিকোস’ তারকা লিওনেল মেসি, নেইমার এবং কিলিয়ান এমবাপাকে নিয়েও শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়। এরপর এনরিকে তারকা রীতির বিলুপ্তি করেন ক্লাবটিতে। তরুণ ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের ওপর জোর দিচ্ছেন  এবং এই পরিবর্তন ইতিমধ্যে সুফল দিতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে ১৯৮২ সালের পর চ্যাম্পিয়নস লিগের এত কাছাকাছি গিয়েও সেমিফাইনালে উঠতে না পারার কষ্টে চোখের জলে বুক ভাসিয়েছে ভিলার খেলোয়াড় ও সমর্থকরা। ভিলা সেমিফাইনালে উঠার এত কাছে গিয়েও ব্যর্থ হওয়ায় পর দলটির বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ অসম্ভব ভেঙে পড়েন। দুই দলের সবাই মাঠ ছাড়ার পরও তিনি মাঠে বসে ছিলেন।

অন্যদিকে ভিলার স্প্যানিশ ম্যানেজার উনাই এমরি চরম হতাশ হয়ে পড়েন। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তিনি মাটিতে শুয়ে পড়েন। স্বদেশী এনরিকের বিপক্ষে তাঁর ভাগ্যটা বরাবরই এমন কষ্টের। এর আগে ২০১৬-১৭ মৌসুমে কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলেোনা-পিএসজি মুখোমুখি হয়েছিল। তখনও পিএসজির ডাগআউটে ছিলেন এমরি। আর বার্সার ম্যানেজার ছিলেন এনরিকে। যে ম্যাচের প্রথম লেগে পিএসজি জিতেছিল ৪-০ গোলে, পরের লেগে বার্সা জিতেছিল ৬-১ গোলে।