আইন ও অপরাধ

বিচার ব্যবস্থাকে আরো সহজ করতে হবে: আসিফ নজরুল

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচার বিভাগেরও সীমাবদ্ধতা আছে। তবে সীমাবদ্ধতা মেনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। বিচার ব্যবস্থাকে আরো সহজ করতে হবে।

রবিবার (২০ এপ্রিল) সকালে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ বা সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, “বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে যেন উপমহাদেশের অন্যান্য দেশগুলো থেকে প্রশিক্ষণার্থীরা বাংলাদেশে আসেন।”

“‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এসে অনেকেই রাজনৈতিক বক্তব্য দিতেন”, যোগ করেন আইন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “বিচারকদের অন্যায়-অবিচার করার কোনো সুযোগ নেই। সুবিধার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কোনো সম্পর্ক নেই। সুবিধা না পেলেও বিচারকদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।” 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, “কোটা আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হলে আইন মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই। এ মামলায় ২ জনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আছে।‌ সেটি ৮ মাসেও কেন প্রত্যাহার হয়নি সেটা সংশ্লিষ্টরা বলতে পারবেন। তার ভাইকে কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়নি। বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।”

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি ফাইয়াজ।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ফাইয়াজের বয়স এখনো ১৮ হয়নি বলে তার আইনজীবীর ভাষ্য।

নিহত গিয়াস উদ্দিনের ভগ্নিপতি মো. ফজল প্রধান ২৪ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করার পর সেই রাতেই সাধারণ পোশাকের একদল পুলিশ ফাইয়াজকে তাদের মাতুয়াইলের বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবারের ভাষ্য।

পরে পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে লাশ গুম এবং এ কাজে সহায়তাসহ তার মোটরসাইকেল চুরির মামলায় আসামি হিসেবে ২৭ জুলাই আদালতে হাজির করা হয় ফাইয়াজকে।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা অন্য আসামিদের সঙ্গে ফাইয়াজকেও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম শান্তা আক্তার প্রত্যেক আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও ফাইয়াজকে রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে আলোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে একটি রিট আবেদন হলে হাইকোর্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে।

পরে ২৮ জুলাই হাকিম আদালত রিমান্ড আদেশ বাতিল করে ফাইয়াজকে শিশু হিসেবে গণ্য করে গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেয়।

এরপর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ফাইয়াজের জামিন চেয়ে আবেদন করা হলেও বিচারক তাতে সায় দেননি। আজ এ বিষয়ে কথা বললেন আইন উপদেষ্টা।