২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস। মামলায় নিজেকে মেয়র ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল সিনিয়র সহকারী জজ এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল বিসিসি ২০২৩ এ মামলাটি করেন তিনি। বিচারক হাসিবুল হাসান মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন: ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণা চেয়ে মামলা
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিসিসি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে তাপসের নিশ্চিত জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালের বিসিসি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার শঙ্কার কথা তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছে জানিয়েছিলেন মেয়র প্রার্থী তাপস। তারপরও তৎকালীন ডিজিএফআই এবং এনএসআই সদস্যরা নৌকা প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছে। পাশাপাশি ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করা হয়।
নির্বাচনের আগ থেকেই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বহিরাগতদের এনে বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়েছিল। ওই নির্বাচনের ভোটের দিন পর্যন্ত তাপসকে বিভিন্ন ভয় দেখানো হয়। পোলিং এজেন্টেদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ প্রার্থী তাপস সন্ত্রাসীদের হাতে আক্রান্ত হন। ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে নৌকা প্রার্থীর লোকজন ইভিএম মেশিনের বাটন চেপে নিজেরাই ভোট দিয়েছিল। তখন একজন বহিরাগতকে ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে দিলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ৫০টি ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতির হার শতকরা ২০-২৫ ভাগ লক্ষ্য করা গেলেও ফলাফলে মাত্রাতিরিক্ত ভোট গ্রহণ দেখানো হয়েছে।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, নির্বাচনে তাপসের যে ভোট দেখানো হয়েছে, তা তার জনসমর্থনের চেয়ে কম। বিষয়গুলো তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্তদের জানালেও কোনো সমাধান হয়নি। ভোটাররা সঠিকভাবে ভোট দিতে পারলে তিনি বিজয়ী হতেন। তাই ২০২৩ সালের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে তাপসকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে মামলায়।
এর আগে, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে এনে বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
২০২৩ সালের ১২ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি বুথে একযোগে ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে সাতজন মেয়র প্রার্থী, ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১১৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪২ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থীসহ মোট ১৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মো. ফয়জুল করীম।