সারা বাংলা

ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সংকট, এখনো উৎপাদন বন্ধ ৩০ ভাগ কারখানায়

সাভারের আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) বিদ্যুৎ সংকট সৃষ্টি হওয়ায় কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কিছু কারখানা জেনারেটর ব্যবহার করে ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছ থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন সচল রেখেছে। তবে, এসব কারখানায় সক্ষমতার শতভাগ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। পাঁচটি কারখানায় ছুটি দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি। ফলে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পরের দিন মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ৭০ ভাগ কারখানা জেনারেটর ব্যবহার করে ও পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাকি ৩০ ভাগ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ আছে। এর মধ্যে পাঁচটি কারাখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে ডিইপিজেডে ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। 

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসির কাছ থেকে গ্যাস নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। তবে, বিল বকেয়া রাখায় সোমবার দুপুরে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্টে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক শরীফুল ইসলাম বলেছেন, আজ (মঙ্গলবার) সকালেও বিদ্যুৎ ছিল না। সকাল ৯টা পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) কাছ থেকে অল্প পরিমাণে সাপোর্ট পাওয়া যায়। তা দিয়ে কারখানাগুলো চালানো সম্ভব হয়নি। কিছু কারখানা জেনারেটর ব্যবহার করে কাজ করছে। কারখানা চালু করতে না পারায় পাঁচটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আরইবি বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। ১০টা ৫৫ মিনিট থেকে আমরা ২৫ থেকে ২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। এতে প্রায় ৭০ ভাগ কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরইবি থেকে ৩৫ মেগাওয়াট পাব বলে আশা করছি। সেটি পেলে ৯০ ভাগ সমাধান হয়ে যাবে। তবে, তারা এটি নিরবচ্ছিন্নভাবে দিতে পারবে না। ফলে, সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।

বিদ্যুৎ সংকটের প্রভাব সম্পর্কে ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, বকেয়া বিল নিয়ে তিতাসের সঙ্গে ইউনাইটেডের দীর্ঘদিনের সমস্যা। এক পক্ষ বলছে, বকেয়া নেই; অপর পক্ষ বলছে, বকেয়া আছে। এ পরিস্থিতিতে ভোগান্তিতে পড়েছে ডিইপিজেডের কারখানাগুলো। এতে উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের শিপমেন্টের ক্ষেত্রে তাদের কাটলাইন, ডেডলাইন ফেল করবে। সময়মতো রপ্তানি করতে পারবে না।

ডিইপিজেডে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মমতাজ হাসান বলেছেন, সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে।